আখাউড়ায় অভিভাবক সেজে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিশুশিক্ষার্থীর কানের দুল চুরি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানচিত্র

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় অভিভাবক সেজে বিদ্যালয়ে ঢুকে এক নারী প্রতারক চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে সোনার এক জোড়া কানের দুল চুরি করে নিয়ে গেছেন। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে পৌর এলাকার তারাগন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার শিকার ওই শিশুশিক্ষার্থীর নাম সুবর্ণা আক্তার। সে উপজেলার তারাগন গ্রামের মৃত শাহীন মিয়ার মেয়ে। তবে প্রতারণা করা ওই নারীর পরিচয় মেলেনি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

বিদ্যালয়সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বেলা ১০টায় বোরকা ও হিজাব পরা এক নারী তারাগন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান। তিনি নিজেকে ওই বিদ্যালয়ের পাশের ‘ব্রিলিয়ান্ট কিন্ডারগার্টেন’-এর প্রথম শ্রেণির ছাত্রী মীমের মা বলে পরিচয় দেন। তিনি বিদ্যালয়ের অন্য অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। বিদ্যালয়ের পরিবেশ অনেক সুন্দর উল্লেখ করে নিজের মেয়েকে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসবেন বলে জানান। বেলা সোয়া ১১টার দিকে বিদ্যালয়ে আসা চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুবর্ণা সমাবেশ (অ্যাসেম্বলি) শুরুর আগে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খেলা করছিল। ওই নারী একপর্যায়ে সুবর্ণার কাছে তার পরিবার সম্পর্কে খোঁজ নেন। কথা বলার এক ফাঁকে কৌশলে সুবর্ণাকে নিয়ে বিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে পড়েন ওই নারী। বাইরে নিয়ে চেতনানাশক শুকিয়ে ওই শিশুশিক্ষার্থীর কান থেকে সোনার এক জোড়া কানের দুল চুরি করে পালিয়ে যান। ঘটনার পর ওই শিশুশিক্ষার্থী কিছুক্ষণ অবচেতন থেকে বিদ্যালয়ের ফটকে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘোরাঘুরি করছিল। একপর্যায়ে সে শ্রেণিকক্ষে ঢুকে কান্না শুরু করে। পরে শিক্ষকেরা অভিভাবক ডেকে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৌসুমী আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই নারী এমনটা করবেন, আমরা কোনোভাবেই বুঝতে পারিনি। ওই শিশু ক্লাসে এসে কান্না শুরু করলে বিষয়টি আমরা বুঝতে পারি। তখন সে জানায়, তার কানের দুল নেই। পরে তার অভিভাবককে ডেকে এনে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’

মৌসুমী আক্তার আরও বলেন, বাড়ির সামনে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে ওই নারীর পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। তবে বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানানো হয়নি। তিনি বলেন, ওই নারী বিদ্যালয় থেকে বের হওয়ার পর কী করেছেন, সুবর্ণা তা বলতে পারছে না।