বগুড়ার শেরপুরে শিশুপার্কে নেই খেলনা, ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত শিশুরা

শিশুদের খেলাধুলার জন্য শেরপুর পৌর শহরে শিশুপার্কে নেই কোনে খেলনাছবি: প্রথম আলো

বগুড়ার শেরপুর পৌর শহরে শিশুদের বিনোদনের জন্য স্থাপিত একমাত্র শিশুপার্কটি এখন অযত্ন-অবহেলায় জরাজীর্ণ। একসময় যেখানে শিশুরা খেলাধুলায় মেতে উঠত, এখন সেখানে নেই কোনো খেলনা। পূর্বে স্থাপিত খেলনাগুলো নষ্ট হয়ে পড়েছে, মরিচা পড়ে অকার্যকর হয়ে গেছে।

শহরের একমাত্র দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা শাপলা চত্বরের একই অবস্থা। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এটি দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একসময় যেখানে শিশুরা আনন্দে সময় কাটাত—এখন অব্যবস্থাপনার কারণে সেখানে কেউ যায় না। এ বছরও ঈদে শেরপুরের শিশুরা এসব স্থান থেকে বিনোদনবঞ্চিত হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, শেরপুর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরসাহাপাড়া মহল্লায় ১৯৯৮ সালে নির্মিত শিশুপার্কটির অবস্থা শোচনীয়। একসময় এখানে নানা ধরনের খেলনা ছিল, কিন্তু বর্তমানে সেগুলোর কিছুই অবশিষ্ট নেই। পার্কের প্রবেশমুখে শহীদ মিনার ও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীন বাংলার ভাস্কর্য থাকলেও ভেতরে বিনোদনের কোনো উপকরণ নেই। বসার জন্য তৈরি ইট-সিমেন্টের চেয়ার-টেবিলও ভেঙে গেছে। এখন পার্কটি কার্যত পরিত্যক্ত।

অন্যদিকে ২০১২ সালে শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জগন্নাথপাড়া মহল্লায় শেরপুর খেলার মাঠের পাশে নির্মিত শাপলা চত্বর ও ফোয়ারা এখন জীর্ণদশায় পরিণত হয়েছে। সিমেন্টের তৈরি শাপলা ফুলটি খসে পড়ছে, ফোয়ারাটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। জায়গাটি আগাছায় ঢাকা, অপরিষ্কার। চার বছর ধরে এখানে কোনো আলো জ্বলে না।

পার্কে স্বাধীন বাংলার ভাস্কর্যও অযত্ন-অবহেলায় জরাজীর্ণ
ছবি: প্রথম আলো

শহরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আরাফাত রহমান, ব্যবসায়ী রঞ্জন দত্ত, অসিম দত্তসহ কথা হয় ১৫ জন অভিভাবকের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য শিশুপার্ক অপরিহার্য। ঈদসহ বিভিন্ন জাতীয় উৎসবে শেরপুরের শিশুদের বিনোদনের কোনো জায়গা নেই। নতুন করে শিশুপার্ক পুনর্নির্মাণে পৌর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগী হওয়া উচিত।

শেরপুর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর গোবিন্দ বাগচী বলেন, শহরের শত শত শিশুর বিনোদনের জন্য নতুন করে শিশুপার্ক নির্মাণের কোনো বিকল্প নেই।

এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভার প্রশাসক আশিক খান প্রথম আলোকে বলেন, শিশুপার্কের উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে পার্কের সংস্কারকাজ শুরু হবে। পাশাপাশি শাপলা চত্বর পুনরায় চালু করার জন্যও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।