তালাবদ্ধ ঘর থেকে শিশুর পোড়া লাশ উদ্ধার, ‘মাদকাসক্ত’ বাবা আটক

সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় তালাবদ্ধ ঘর থেকে আগুনে পুড়ে যাওয়া এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ভোর পাঁচটার দিকে উপজেলার ধলবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শিশুকে ঘরে রেখে আগুন দেওয়ার অভিযোগে শিশুটির বাবা ইয়াসিন আলীকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত শিশুর নাম আলিফ হোসেন (৮)। সে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র।

সাতক্ষীরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আলিফের মরদেহ পুড়ে কয়লা হয়ে গিয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শিশুটির বাবা ইয়াসিন আলীকে নিজ বাড়ির তিন কিলোমিটার দূরে আগরদাড়ি এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। কী কারণে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে, সে বিষয়ে এখনো ইয়াসিন আলী মুখ খোলেননি। তবে তিনি একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অভিযুক্ত ইয়াসিন আলীর বাবার নূর ইসলাম ওরফে আজিজুল প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তাঁর ছেলে ইয়াসিন নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করছেন। এ নিয়ে ইয়াসিনের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে স্ত্রীকে ইয়াসিন মারধর করলে তিনি রাগ করে শিশুপুত্র আলিফকে নিয়ে সপ্তাহ দুয়েক আগে সদর উপজেলার ধুলিহর ইউনিয়নের তালতলা গ্রামে নানার বাড়িতে চলে যান। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ইয়াছিন তালতলা গ্রামের ওই বাড়িতে যান। তিনি স্ত্রীকে বলেন, আলিফের দাদি খুব অসুস্থ, তাঁকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দাদি আলিফকে দেখতে চেয়েছেন। এ কথা বলে আলিফকে তিনি ওই বাড়ি থেকে তাঁর নিজের বাড়িতে আনেন।

নূর ইসলামের ভাষ্য, ইয়াসিন রাতে ছেলেকে ঘুম পাড়ান। এরপর আজ ভোর চারটার দিকে ছেলের গায়ে কাঁথা জড়িয়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে পাশে উচ্চৈঃস্বরে গান ছেড়ে ঘরের তালা ঝুলিয়ে তিনি পালিয়ে যান।

নূর ইসলাম আরও বলেন, তিনি ইয়াসিনের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একই এলাকায় বসবাস করেন। লোকজনের কাছে খবর পেয়ে আজ ভোরে ছেলের বাড়িতে এসে দেখেন, দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখেন তাঁর নাতি আলিফ পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। তখন তিনি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। তারা ভোর পাঁচটার দিকে এসে আলিফের পোড়া লাশ উদ্ধার করে।