নৌকা নেই, জাপার জয়ের পথে বাধা তবু আ.লীগই 

এ আসনের ভোটারদের মধ্যে স্বতন্ত্র নজরুল ইসলাম ও জাপার সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়েই আলোচনা বেশি হচ্ছে।

উপরের বাঁদিক থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদ ,নজরুল ইসলাম ,বদরউদ্দিন আহমেদ ও শাহীনুর আলম

জাতীয় পার্টির (জাপা) সঙ্গে আসন সমঝোতার কারণে ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) আসনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নেই। ফলে এ আসনে নৌকা প্রতীক নেই। এ আসনে জাপার প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ মুক্তি নিজের পোস্টারে লিখেছেন ‘জাতীয় পার্টির মনোনীত ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী’। কিন্তু এরপরও যেন নির্বাচন জয়ের পথে আওয়ামী লীগই তাঁর বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ আসনে এবার মোট সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি নজরুল ইসলাম (ট্রাক প্রতীক) ও ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বদরউদ্দিন আহমেদ (ঈগল প্রতীক)। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই আকন্দ নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিলেও তাঁর কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নজরুল ইসলামকে সমর্থন দিয়েছেন। ফলে জয়ের ব্যাপারে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জাপার সালাহউদ্দিন আহমেদ। এ আসনের ভোটারদের মধ্যে স্বতন্ত্র নজরুল ইসলাম ও জাপার সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়েই আলোচনা বেশি হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহ-৫ আসনের আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এবার দলের মনোনয়ন পাননি। মুক্তাগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি কে এম খালিদ ও আবদুল হাইয়ের নেতৃত্বে দুই ভাগে বিভক্ত। কে এম খালিদ মুক্তাগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। আবদুল হাই আকন্দ মুক্তাগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি মুক্তাগাছা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও পৌরসভার সাবেক মেয়র। উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের বড় একটা অংশ তাঁর অনুসারী। আবদুল হাইয়ের অনুসারীরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করলেও কে এম খালিদের পক্ষ ইতিমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে জাপাকে সমর্থন জানিয়েছে।

জাপার প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে কথা বলতে তাঁর মুঠোফোনে কল করে ও খুদে বার্তা পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি। ময়মনসিংহ জেলা জাতীয় পার্টির সদস্যসচিব মোশাররফ হোসেন বলেন, ২৬টি আসনে জাপার প্রার্থীকে আওয়ামী লীগ সমর্থন জানিয়েছে। কাজেই পোস্টারে এটি লিখে প্রচার করতে কোনো বাধা নেই। জাপার পক্ষ থেকেও এ নিয়ে কোনো নিষেধ নেই।

আবদুল হাইয়ের সমর্থক মুক্তাগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ বিশ্বাস বলেন, ‘নির্বাচনে আমরা প্রকাশ্যেই স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলামের পক্ষে কাজ করছি। এ নিয়ে দলীয়ভাবে আমাদের ওপর কোনো ধরনের নিষেধ নেই।’

ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচনে থাকলে আমি অংশ নিতাম না। কিন্তু দলীয় প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি মুক্তাগাছার উন্নয়নের জন্য, মুক্তাগাছাকে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসমুক্ত করার লক্ষ্যে।’

এ আসনে অন্য প্রার্থীরা হলেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সামান মিয়া (আম প্রতীক), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের শাহীনূর আলম (গামছা প্রতীক), ওয়ার্কার্স পার্টির রফিকুল ইসলাম (হাতুড়ি প্রতীক) ও জাকের পার্টির আজহারুণ ইসলাম (গোলাপ ফুল প্রতীক)।