বেদখল হওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ফেরত পেয়েছে সাঁওতাল সম্প্রদায়ের ১২টি পরিবার। রোববার দিনাজপুর সদর উপজেলার পাড়গাঁও চিলমন খান দিঘীরপাড়ে
ছবি: প্রথম আলো

দিনাজপুর সদর উপজেলায় মুজিব বর্ষে উপহার পাওয়া ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের দখল হওয়া ঘর উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আজ রোববার বিকেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মর্তুজা আল মুঈদ আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় গিয়ে সাঁওতাল পরিবারগুলোকে ঘরে তুলে দেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের চিলমন খান দীঘির তিন ধারে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ৫২টি সাঁওতাল পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ করা হয়েছিল। ৪০টি ঘরে ৪০টি সাঁওতাল পরিবার আগে থেকে বসবাস করে আসছিল। সর্বশেষ আজ ১২টি পরিবার তাদের ঘর বুঝে পেল।

ঘর বুঝে পেয়ে আনন্দিত সাঁওতাল পরিবারগুলো। সাঁওতালদের একটি পরিবারের প্রধান সুনীল কিস্কু প্রথম আলোকে বলেন, দীঘিরপাড় ও পাড়গাঁও গ্রামে শতাধিক সাঁওতাল পরিবার থাকে। এর মধ্যে দীঘিরপাড়ে ৫২টি পরিবারের বাস। কিছুদিন আগেও মাটির ঘরে থাকত তারা। বিদ্যুৎ ছিল না। এখন সেখানে পাকা ঘর পেয়েছে তারা।

সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর কলেজশিক্ষার্থী শাওন হাসদা বলেন, ‘প্রশাসন আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, এ জন্য আমরা আনন্দিত। আমরা কারও প্রতিপক্ষ বা বিরোধী নই। সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে চাই।’

স্থানীয় সূত্রগুলো আরও জানায়, খান দীঘিরপাড়ে সাঁওতালদের নামে বরাদ্দ করা আশ্রয়ণের ঘরগুলো দখলে নিয়ে সেখানে বসবাস করছিল স্থানীয় কয়েকটি পরিবার। প্রায় চার মাসের বেশি সময় ধরে ঘরগুলোতে উঠতে না পেরে কষ্টে দিন কাটছিল সাঁওতাল পরিবারগুলোর।

৯ সেপ্টেম্বর বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘সাঁওতালদের হাতে দলিল, অন্যদের দখলে আশ্রয়ণের ঘর’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নজরে আসে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ ওরফে জাকীর। ঘরগুলো সাঁওতাল পরিবারগুলোকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য ইউএনওকে নির্দেশ দেন তিনি।

আজ বিকেলে ইউএনও মর্তুজা আল মুঈদ প্রথম আলোকে বলেন, সাঁওতালদের জন্য বরাদ্দ করা আশ্রয়ণ প্রকল্পের বেশ কয়েকটি ঘর অন্যরা দখলে নিয়েছিলেন। আজ ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার ও কোতোয়ালি থানার পুলিশ সদস্যসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে ওই পরিবারগুলোকে তাদের ঘরে তুলে দেওয়া হয়েছে।