অটোরিকশা ছিনিয়ে নিতে শিক্ষার্থীকে শ্বাস রোধ করে হত্যা
অভাবের সংসারে রাজমিস্ত্রি বাবাকে সাহায্য করতে আজিজুল ইসলাম (১৮) লেখাপড়ার পাশাপাশি বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত অটোরিকশা চালাতেন। সেই অটোরিকশা ছিনিয়ে নিতে তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে দুর্বত্তরা। আজিজুল ঢাকার কেরানীগঞ্জের ওরিয়েন্ট উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
শনিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বসুন্ধরা রিভারভিউ এলাকায় অপসোনিন ফার্মাসিউটিক্যালসের কারখানাসংলগ্ন কলাগাছের ঝোপের ভেতর থেকে আজিজুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। আজিজুল বাগেরহাটের মোরলগঞ্জ থানার গোয়াবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মিঠু শেখের পুত্র। তিনি কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা ইউনিয়নের মীরেরবাগ এলাকায় ভাড়া বাসায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন।
আজিজুল মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন জানিয়ে তাঁর চাচা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার অটোরিকশা নিয়ে প্রতিদিন বিদ্যালয় থেকে ফিরে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চালাত আজিজুল। সংসারে অভাব থাকায় লেখাপড়ার পাশাপাশি রাজমিস্ত্রি বাবাকে সাহায্য করত। এই টাকা দিয়ে লেখাপড়ার খরচ জোগাত আজিজুল।’
নজরুল জানান, শনিবার রাত নয়টা বেজে গেলেও আজিজুল বাসায় না ফেরায় তাঁর মুঠাফোনে কল করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তাঁকে খুঁজতে গিয়ে জানা যায় পাশের বাড়ির শিশু রবিউলকে (১০) নিয়ে অটোরিকশায় করে সে চড়ে ঘুরতে গিয়েছিল। এরপর রবিউলের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সে জানায় কয়েকজন অজ্ঞাতনামা লোক জোরপূর্বক আজিজুলকে হাসনাবাদ রিভারভিউ এলাকায় একটি ঝোপের ভেতরে নিয়ে মারধোর করেছে। এ সময় দুর্বৃত্তরা শিশু রবিউলকে চড়থাপ্পড় দিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়।
আজিজুলের চাচা আরও বলেন, ‘রবিউলের তথ্য মোতাবেক তাকে নিয়ে হাসনাবাদ রিভারভিউ এলাকায় কলাগাছের ঝোপের ভেতরে যাই। সেখানে গিয়ে আজিজুলের লাশ দেখতে পাই। অটোরিকশাও পাওয়া যায়নি। পরে এ ঘটনায় পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। আমরা আজিজুলের হত্যাকারীদের শিগগিরই গ্রেপ্তার ও ফাঁসি দাবি করছি।’
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক জহিরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে হাসনাবাদ এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা অটোরিকশাটি ছিনিয়ে নিতে আজিজুলের গলায় বেল্ট পেঁচিয়ে তাঁকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। শিগগিরই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।