শ্যামাসুন্দরী খালে ময়লার স্তুপ, মশার উৎপাত

তারিক মোর্শেদ, মাহবুবার রহমান, বহুলুল ইসলাম , তৌহিদুল ইসলাম, আজমল হোসেন, মাহমুদ রহমান

রংপুর নগরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে শ্যামাসুন্দরী খাল। খালের পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে নাকে আসে দুর্গন্ধ। খালের জায়গায় জায়গায় আবর্জনার স্তূপ। সেখানে ভনভন করছে মশা-মাছি।

স্থানীয় সংস্কৃতিকর্মী ও সমাজসেবক ফরহাদুজ্জামান বলেন, ‘এই খাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না থাকায় মশার উৎপাতে আমরা অতিষ্ঠ। সেই সঙ্গে এলাকার খেলার মাঠও হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে রাস্তা ও নালার কাজ হয়েছে। এলাকার অলিগলির রাস্তাগুলো অপ্রশস্ত হওয়ায় গাড়ি চলাচল কষ্টকর।’

সেনপাড়া, নিউ সেনপাড়া, করনজাই রোড, নিউ আদর্শপাড়া, মুচিপট্টি, বাদিয়াপাড়া, হাজিপাড়া, কলেজ রোড আলমনগর, কলেজ রোড আকালীটারী এলাকা নিয়ে রংপুর সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ড। সরেজমিনে দেখা গেছে, শ্যামাসুন্দরী খালে পানিপ্রবাহ নেই। বাসাবাড়ির বর্জ্য এই খালের মধ্যে ফেলতে ফেলতে কোথাও কোথাও তা ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, মশা-মাছির উৎপাতে টেকা দায়। মশা নিধনে মাঝেমধ্যে ফগার যন্ত্র দিয়ে ওষুধ ছিটানো হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়ায় তাঁরা আতঙ্কে আছেন।

২১ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও জাতীয় পার্টির জেলা কমিটির সদস্য মাহবুবার রহমান বলেন, নির্দিষ্ট সময় পরপর শ্যামাসুন্দরী খাল পরিষ্কার করা হয়। মশার উৎপাত থেকে রক্ষা পেতে ফগার মেশিন দিয়ে ওষুধ ছিটানো হয়।

এই ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর (স্বতন্ত্র) প্রার্থী তারিক মোর্শেদ বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নে কাজ করার পাশাপাশি ওয়ার্ডবাসীর নাগরিকসুবিধাগুলো নিশ্চিত করতে কাজ করবেন।

শহরের প্রধান সড়কের পাশে সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, নিউ ইঞ্জিনিয়ারপাড়া, উত্তর মুন্সিপাড়া, গোমস্তাপাড়া, পাকপাড়া, মুলাটোল, গুড়াতীপাড়া, লিচুবাগান, চাউল আমোদ রোড, থানা রোড এলাকা নিয়ে গড়ে উঠেছে ২০ নম্বর ওয়ার্ড। সরেজমিনে দেখা গেছে, উত্তর মুন্সিপাড়া থেকে মুলাটোল আমতলা পর্যন্ত সড়কটি পাকা হলেও কিছুটা অপ্রশস্ত। নিউ ইঞ্জিনিয়ারপাড়া থেকে গোমস্তাপাড়া হয়ে মুলাটোল সেতু পর্যন্ত শ্যামাসুন্দরী খালটি আবর্জনায় ভরা।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এই খাল রক্ষণাবেক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেই। এর ফলে বর্ষাকালে পানি উপচে পড়ে। তবে সড়কগুলো পাকা হয়েছে, সড়কবাতিও রয়েছে।

২০ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি এলাকার উন্নয়নের জন্য নানা রকম কাজ করেছেন। রাস্তা পাকা করা হয়েছে। পুনরায় নির্বাচিত হলে এলাকায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করবেন।

সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী (স্বতন্ত্র) বহুলুল ইসলাম বলেন, এলাকার অলিগলিতে এখনো কাঁচা রাস্তা আছে। সেগুলো পাকা করবেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও ভালো রাখতে ভূমিকা রাখবেন।

১৯ নম্বর ওয়ার্ডের অধীনে পড়েছে নীলকণ্ঠ, রাধাবল্লভ, জলকর, ইসলামপুর, হনুমানতলা, ধাপ চিকলীভাটা, রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এলাকা, ধাপভগি, ধাপ স্টাফ কোয়াটার, ধাপ ইঞ্জিনিয়ারপাড়া এলাকা নিয়ে। সরেজমিনে দেখা গেছে, এসব এলাকার প্রধান সড়ক পাকা হলেও কিছু কিছু অলিগলির রাস্তা এখনো কাঁচা। মেডিকেল কলেজের বর্জ্য অপসারণ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। হাসপাতালের আশপাশে, প্রধান সড়কের পাশে, বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা যায়। তবে সড়কবাতি পর্যাপ্ত।

১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর (স্বতন্ত্র) মাহমুদ রহমান। তিনি বলেন, ‘ওয়ার্ডবাসীর পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। এলাকায় রাস্তা পাকা করেছি। অলিগলিসহ সব সড়কে সড়কবাতি লাগানো রয়েছে। আমার ওয়ার্ডে স্টেডিয়াম, ক্রিকেট গার্ডেনও আছে। পুনরায় নির্বাচিত হলে বাকি কাজগুলো করার চেষ্টা করব।’

এই ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী ও জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন। তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নে কাজ করবেন।