সশস্ত্র পথ ছেড়ে আত্মসমর্পণ করতে চাইলে স্বাগত জানানো হবে

বান্দরবান সার্কিট হাউসে র‍্যাবের মহাপরিচালক খুরশীদ হোসেন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। আজ বেলা তিনটায়ছবি: প্রথম আলো

বান্দরবানের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফের) উদ্দেশে র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, সশস্ত্র পথ ছেড়ে আত্মসমর্পণ করতে চাইলে স্বাগত জানানো হবে।

আজ বুধবার রুমায় ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা ও পুলিশ-আনসার সদস্যদের অস্ত্র লুটের ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জেলা শহরে এসে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন র‍্যাবের মহাপরিচালক। এর আগে তিনি বান্দরবান সার্কিট হাউসে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), র‌্যাব, পুলিশ, আনসার ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

র‌্যাবের প্রধান খুরশীদ হোসেন বলেন, সন্ত্রাসীরা জঘন্য অপরাধ করেছে। অপরাধীদের ধরার জন্য সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‍্যাব, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর অভিযান চলমান। অপরাধীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

খুরশীদ হোসেন বলেন, যদি কেউ কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিপথে গিয়ে থাকেন এবং এখন ভুল বুঝতে পেরে সশস্ত্র পথ পরিহার করে আত্মসমর্পণ করতে চান, তাঁদের অবশ্য স্বাগত জানানো হবে। তাঁদের পুনর্বাসনের বিষয়টিও বিবেচনা করা হবে।

গতকাল মঙ্গলবার রুমার সুংচংপাড়ায় একজন কার্বারিসহ (পাড়াপ্রধান) গ্রেপ্তার আট ত্রিপুরা কেএনএফের সদস্য কি না, জানতে চাইলে র‌্যাবের প্রধান সাংবাদিকদের বলেন, অভিযান চালিয়ে অপরাধী ধরতে গেলে কিছু মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ত্রিপুরাদের কেউ কেএনএফের সঙ্গে জড়িত কি না, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

সাধারণ বমদের হয়রানির অভিযোগ সত্য নয় জানিয়ে খুরশীদ হোসেন বলেন, বমরা সবাই অপরাধীদের সঙ্গে জড়িত নয়, তবে তাদের উচিত অপরাধীদের দেখিয়ে দেওয়া। তাহলে অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযানে কোনো সংশয় থাকবে না।

চিম্বুক পাহাড়সহ রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচিতে পাঁচ কেজির বেশি চাল কিনতে না দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে র‌্যাব প্রধান বলেন, অভিযানের কিছু বিষয় থাকে যাতে সন্ত্রাসীদের কাছে কেউ খাদ্য সরবরাহ পৌঁছাতে না পারে। তবে এটি সাময়িক ও সব জায়গায় নয় বলে তিনি জানিয়েছেন।

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন র‍্যাবের অতিরিক্ত ডিজি কর্নেল মো. মাহবুব আলম, বিজিবি বান্দরবান সেক্টরের অধিনায়ক কর্নেল সোহেল আহমেদ, বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, জেলা পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন প্রমুখ।

২ এপ্রিল রাত সাড়ে আটটার দিকে প্রথমে সোনালী ব্যাংক রুমা শাখায় হানা দেন অস্ত্রধারীরা। হামলায় কেএনএফের শতাধিক সদস্য অংশ নিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অস্ত্রধারীরা পুলিশ ও আনসার সদস্যদের কাছ থেকে ১৪টি অস্ত্র ও ৪১৫টি গুলি লুট করে নিয়ে যান। ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে অপহরণের ৪৮ ঘণ্টা পর রুমা সদরে ছেড়ে দেন অস্ত্রধারীরা। সেখান থেকে র‍্যাব তাঁকে উদ্ধার করে। রুমার ঘটনার পরদিন সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের থানচি উপজেলার দুটি শাখা থেকে সাড়ে ১৭ লাখ টাকা লুট করেন অস্ত্রধারীরা। এসব ঘটনায় রুমা ও থানচি থানায় ৯টি মামলা হয়। কেএনএফ সদস্যসহ এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয় মোট ৬৩ জনকে।