অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সিরাজগঞ্জে জনতা ব্যাংকের ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

জনতা ব্যংকের তামাই শাখা। সিরাজগঞ্জের বেলকুচিছবি: প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে জনতা ব্যাংকের তামাই শাখা থেকে ৫ কোটি সাড়ে ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে শাখা ব্যবস্থাপকসহ ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের সমন্বিত পাবনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহফুজ ইকবাল বাদী হয়ে গত সোমবার মামলাটি করেন।

মামলার আসামিরা হলেন তামাই শাখার ব্যবস্থাপক ও সিরাজগঞ্জ শহরের ধানবান্দি মহল্লার বাসিন্দা আল আমিন (৪২); সহকারী ব্যবস্থাপক ও বগুড়ার ধুনট উপজেলার বেলকুচি গ্রামের রেজাউল করিম (৩৪); সাবেক ক্যাশ কর্মকর্তা ও সিরাজগঞ্জ শহরের নতুন ভাঙ্গাবাড়ি মহল্লার খালেদ ইউসুফ (৩১); ব্যাংকের কর্মকর্তা ও সিরাজগঞ্জ সদরের বনবাড়িয়া কাদাই গ্রামের রাশেদুল ইসলাম (৩১) এবং ক্যাশ কর্মকর্তা ও সদরের চর রায়পুর গ্রামের শাহ মখদুম দৌলা (২৯)।

দুদকের সমন্বিত পাবনা কার্যালয়ের উপপরিচালক খায়রুল হক প্রথম আলোকে বলেন, কমিশনের অনুমতি নিয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়েছে। তদন্তে কারও সংশ্লিষ্টতা পেলে আসামির সংখ্যা বাড়তে পারে।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ২৪ মার্চ পর্যন্ত ৫ আসামিসহ আরও অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জন একে অপরের সহযোগিতায় প্রতারণা, অপরাধমূলক অসদাচরণ ও অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে জনতা ব্যাংকের তামাই শাখার ৫ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে দণ্ডবিধির ৪২০, ৪০৯, ১০৯ ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এ জন্য ২৫ মার্চ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক নজরুল ইসলামের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে কমিশনের অনুমতি নিয়ে মামলা করা হয়েছে।

২৪ মার্চ দিবাগত রাতে জনতা ব্যাংকের সিরাজগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) নজরুল ইসলামের অভিযোগের ভিত্তিতে ৫ কোটি সাড়ে ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের জন্য ব্যাংকটির তামাই শাখার ব্যবস্থাপক আল আমিন, সহকারী ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম, ব্যাংকের কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়। পরে অভিযোগটি বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুদকে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় ২৫ মার্চ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই সদস্যের তদন্ত দল তদন্ত শুরু করে। এ ছাড়া জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত দল ২৭ মার্চ তদন্ত শুরু করেছে। ২৮ মার্চ উভয় তদন্ত দল প্রয়োজনীয় তথ্য–উপাত্ত সংগ্রহ করে নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরে গেছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ প্রতিবেদন জমা দেয়নি।

আরও পড়ুন

অর্থ আত্মসাতের খবরটি জানাজানির পর ব্যাংকের গ্রাহকদের অনেকে উৎকণ্ঠিত হয়ে হিসাব মেলাতে প্রতিদিন ব্যাংকে ভিড় করছেন। গ্রাহকদের সিসি ঋণের হিসাবসহ বিভিন্ন হিসাব থেকে নয়ছয়ের বিভিন্ন তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তবে এ ব্যাপারে এখনই আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ কথা বলতে রাজি হননি।

উপমহাব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তে সঠিক বিষয়টি বের হয়ে আসবে। তদন্তাধীন বিষয়ে মন্তব্য না করাই ভালো। তদন্ত শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে সব জানানো হবে।