পুলিশ কনস্টেবলকে সহকর্মীদের ফুলেল বিদায়

অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কনস্টেবল সুলতান আহম্মদকে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সুসজ্জিত গাড়িতে করে নিজ বাড়ি আখাউড়ার ধরখার গ্রামে পৌঁছে দেওয়া হয়
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে চাকরি করেছেন সুলতান আহম্মদ। সরকারি নিয়মে চাকরির মেয়াদ শেষ। তাঁর অবসর নেওয়ার মুহূর্ত স্মরণীয় করে রাখতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর থানা-পুলিশ। সুসজ্জিত গাড়িতে করে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে তাঁকে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গতকাল বুধবার রাতে বাঞ্ছারামপুর থানায় তাঁকে ফুল দিয়ে বিদায় জানানো হয়। সুলতান আহম্মদ আখাউড়া উপজেলার দরখার গ্রামের মৃত জাফর আলীর ছেলে। পড়াশোনা করেছেন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। এরপর ১৯৮৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগ দেন। ৩৯ বছর ১০ মাস পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি করেন। কনস্টেবল পদে প্রথমে চট্টগ্রামে যোগদান করেন। পর্যায়ক্রমে কক্সবাজার, ফেনী, কুমিল্লা এবং সর্বশেষ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর থানায় যোগদান করেন।

সুলতান আহম্মদের তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। বড় ছেলে ব্যবসা করেন, মেজ ছেলে প্রবাসে থাকেন এবং ছোট ছেলে এলাকায় একটি ফার্মেসি চালান। দুই মেয়ের মধ্যে একজনকে বিয়ে দিয়েছেন, অন্য মেয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থী।

আজ বেলা ১১টার দিকে বাঞ্ছারামপুর থানা থেকে জেলার আখাউড়া উপজেলার ধরখার গ্রামের বাড়িতে সুসজ্জিত গাড়িতে তাঁকে পৌঁছে দেন থানার পুলিশ সদস্যরা। দুপুরের দিকে তিনি গ্রামের বাড়িতে পৌঁছান। গ্রামবাসী পুলিশের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। কর্মজীবন শেষে অবসরকালীন এমন আয়োজনে মুগ্ধ তিনি।

অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কনস্টেবল সুলতান আহম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের চাকরিতে কনস্টেবলের অবসর খুব সাধারণ ঘটনা। সাধারণত কনস্টেবলদের আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় দেওয়া হয় না। কিন্তু তাঁর বেলায় ভিন্ন ঘটনা ঘটল। বিদায় সংবর্ধনাটি তাঁর জীবনের স্মরণীয় ঘটনা হয়ে থাকবে। এভাবে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে বিদায় দেওয়া হবে—এটা তিনি ভাবেননি। গ্রামের মানুষও খুব খুশি। এ জন্য তিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) পুলিশ সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।

বাঞ্ছারামপুর থানার ওসি মো. নূরে আলম প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ সুপার এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেন। গতকাল রাতে কনস্টেবল সুলতান আহম্মদকে ফুল দিয়ে বিদায় জানানো হয়। আজ সকালে ফুলসজ্জিত গাড়িতে করে তাঁকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। বিষয়টি স্মরণীয় করে রাখতে এমন উদ্যোগ। বিদায়বেলায় তাঁর মুখে হাসি ফোটাতে পেরে তাঁরাও আনন্দিত।