ভারতে পালান রবিউল পরিচয়ে, গ্রেপ্তারের পর জানা গেল তিনি স্ত্রী হত্যা মামলার আসামি আনোয়ার

গ্রেপ্তার আনোয়ার হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা এলাকার সুমিরদিয়া গ্রামের ডাঙ্গাপাড়ার গৃহবধূ সাদিয়া সুলতানা নয়নতারা (৩৫) হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি তাঁর স্বামী আনোয়ার হোসেন (৪২) প্রায় ১০ মাস ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। আসল পরিচয় গোপন করে রবিউল পরিচয়ে তিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন ভারতে। এরপরও শেষরক্ষা হয়নি। অবশেষে আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যেতে হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ৪ জুলাই সকালে আনোয়ার হোসেন চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের ঠাকুরপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর মহকুমার রাঙ্গেয়ারপোতা এলাকায় অনুপ্রবেশ করেন। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে ধরা পড়ার পর আনোয়ার হোসেন নিজেকে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ এলাকার মৃত আতাউল ইসলামের ছেলে রবিউল ইসলাম হিসেবে পরিচয় দেন। ওই দিন দুপুরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠকের পর তাঁকে পাসপোর্ট আইনে মামলাসহ দর্শনা থানায় সোপর্দ করা হয়। এরপর তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

এদিকে কথিত রবিউল ইসলামের বিষয়ে খোঁজ নিতে থাকে দর্শনা থানা-পুলিশ। পুলিশ জানতে পারে, রবিউলের প্রকৃত নাম আনোয়ার হোসেন। তিনি রবিউল ইসলাম পরিচয়ে ভারতে গিয়ে ধরা পড়েন। আনোয়ার হোসেন মূলত চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সুমিরদিয়া গ্রামের মৃত আনসার আলীর ছেলে। যিনি গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে স্ত্রী সাদিয়া সুলতানাকে কুপিয়ে হত্যার পর থেকে ১০ মাস ধরে আত্মগোপনে ছিলেন।

চুয়াডাঙ্গা আদালত পুলিশের পরিদর্শক নাসির উদ্দিন মৃধা প্রথম আলোকে বলেন, পাসপোর্ট আইনে মামলায় দর্শনা থানা-পুলিশ কথিত রবিউল ইসলামকে বৃহস্পতিবার আদালতে সোপর্দ করেন। তবে গৃহবধূ সাদিয়া সুলতানা হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই)  নীতিশ কুমার আদালতকে জানান, রবিউল ইসলামের প্রকৃত নাম আনোয়ার হোসেন। তিনি স্ত্রী সাদিয়া সুলতানা হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি।

আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রিপন হোসেন হত্যা মামলাটির শুনানির জন্য আগামী রোববার দিন ধার্য করেন। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে গৃহবধূ সাদিয়া সুলতানা নয়নাতারাকে পারিবারিক বিরোধের জেরে কথা-কাটাকাটির একপর্যযায়ে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান স্বামী আনোয়ার হোসেন। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ৯ বছর বয়সী একমাত্র মেয়েও আহত হয়। ঘটনার পর থেকে আনোয়ার পলাতক ছিলেন। সদর থানা-পুলিশ তদন্ত শেষে আনোয়ার হোসেনকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে।