সখীপুরে সন্ধ্যায় মোমবাতি জ্বালিয়ে চলছিল শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা

টাঙ্গাইলের সখীপুরে বিএলএস চাষী উচ্চবিদ্যালয়ে সন্ধ্যায় মোমবাতি জ্বালিয়ে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে
ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় বিএলএস চাষী উচ্চবিদ্যালয়ে সন্ধ্যায় মোমবাতি জ্বালিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বিদ্যালয়ের দোতলার একটি কক্ষে লিখিত পরীক্ষা নেয় নিয়োগ কমিটি। এতে ১৫ আবেদনকারীর মধ্যে ৯ জন অংশ নেন। বিষয়টি জানাজানি হলে রাত সাড়ে আটটার দিকে নিয়োগ স্থগিত করে কমিটি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ হোসেন পাটোয়ারী গতকাল রাত ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। সন্ধ্যা বেলায় পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বিএলএস চাষী উচ্চবিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য গত ১২ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই পদের জন্য ১৫ জন আবেদন করেন। গতকাল শনিবার বিকেল চারটার দিকে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রার্থীদের চিঠি দিয়ে জানানো হয়। যথাসময়ে প্রার্থীরা উপস্থিত হলেও পাঁচ সদস্যের নিয়োগ কমিটির অন্যতম সদস্য জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. আবুবকর সরকার যথাসময়ে উপস্থিত না হয়ে সন্ধ্যায় আসেন। এরপর প্রশ্নপত্র তৈরি করে ওই বিদ্যালয়ের দোতলায় লিখিত পরীক্ষা নেওয়া শুরু করেন। বিদ্যুৎ না থাকায় মোমবাতি জ্বালিয়ে পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু হয়। চাকরিপ্রার্থী ১৫ জন হলেও ৯ জন পরীক্ষায় অংশ নেন। সন্ধ্যা বেলায় মোমবাতি জ্বালিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার ঘটনা শুনে সেখানে স্থানীয় লোকজন উপস্থিত হন। পরে রাত ৯টার দিকে নিয়োগ স্থগিত করে কমিটি।

বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির দাতা সদস্য আবদুর রশিদ অভিযোগ করেন করেন, ‘নিয়োগের বিষয়টি এলাকাবাসী জানেন না। অনেকটা গোপনে তাঁরা রাতের আঁধারে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রধান শিক্ষকের আপন ভাইকে নেওয়ার জন্য পাঁয়তারা করছিল। নিয়োগ স্থগিত হওয়ায় আমরা খুশি।’

প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান বলেন, ‘আমার ভাই এবং বোনের স্বামী চাকরিপ্রার্থী হওয়ায় বিধি মোতাবেক আমি নিয়োগ কমিটির কেউ নই। নিয়োগের সময়ে বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক আনোয়ার হোসেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।’

জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি সময়মতো না আসায় সন্ধ্যায় পরীক্ষা নিতে ‘বাধ্য হওয়ার’ কথা বলেন আনোয়ার হোসেন।

জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মো. আবুবকর সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি যথাসময়ে উপস্থিত হলেও লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরি করতে সময় লেগেছে। অন্যদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় পরীক্ষা যথাসময়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে প্রার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়েছে।’