সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে ৪০ হাজার মানুষ

উপজেলার কুচলিবাড়ি গ্রামে সিঙ্গিমারী নদীর ওপর সেতু নেই। এতে পশ্চিম পারের লোকজনকে ১২ কিলোমিটার ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে।

লালমনিরহাটের পাটগ্রামের কুচলিবাড়ি গ্রামে সিঙ্গিমারী নদীর ওপর নির্মিত জরাজীর্ণ সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন মানুষ। সম্প্রতি তোলা ছবিপ্রথম আলো

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার কুচলিবাড়ি গ্রামে সিঙ্গিমারী নদীতে সেতু না থাকায় ৩৫টি গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। বিকল্প না থাকায় এলাকাবাসী এখানে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছে। কিন্তু এখন সেটিও জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। এতে ওই সাঁকোর ওপর দিয়ে স্থানীয় লোকজনকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, সিঙ্গিমারী নদীর পশ্চিম পারে কুচলিবাড়ি ইউনিয়নের কুচলিবাড়ি, কুচলিবাড়ি ছিট, রুমিরটারী, কলসিরমুখ বিজিবি ক্যাম্প, গিরিয়ারপাড়, মেম্বরের বাড়ি, লালস্কুল, দোইয়ালেরটারী, ললিতারহাট, টেইলেনটারী, কলসিরমুখ, ভেদলোটারী, ডাঙাপাড়া, দৌলতপুরগ্রাম দরগারপাড় এবং পূর্ব পারে জোংড়া ইউনিয়নের আলাউদ্দিন নগর, মোমিনপুর, শিমুলতা, কবরস্থান বাজারসহ অন্তত ৩৫টি গ্রাম। সিঙ্গিমারী নদীতে সেতু না থাকায় এসব গ্রামের মানুষকে বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। পশ্চিম পারের লোকজনকে ১২ কিলোমিটার পথ ঘুরে পাটগ্রাম উপজেলা শহরে যেতে হচ্ছে।

নদীর পূর্ব পারে ২০০ মিটার দূরে জোংড়া ইউনিয়নের মোমিনপুর গ্রামের লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক। এই মহাসড়ক দিয়ে ছয় কিলোমিটার গেলে পাটগ্রাম উপজেলা শহর। তাই পশ্চিম পারের কুচলিবাড়ি ইউনিয়নের লোকজন বাঁশের সাঁকো পার হয়ে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক দিয়ে উপজেলা শহরে যাতায়াত করেন। কিন্তু কৃষকেরা কৃষিপণ্য এবং ব্যবসায়ীরা মালামাল নিয়ে এই সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে পারেন না। সাঁকো পার না হয়েই পশ্চিম পার দিয়েই তাঁদের ১২ কিলোমিটার পথ ঘুরে নানা প্রয়োজনে উপজেলা শহরে যেতে হয়। তাই সেতুটি নির্মিত হলে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহনে আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বেড়ে গেলে বাঁশের সাঁকো মেরামত করা হয়। এই সময় ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় এলাকাবাসী এটি সংস্কার করেন।

পাটগ্রাম আদর্শ কলেজের ছাত্র মুন্না বাবু জানায়, গ্রামের অনেক ছেলেমেয়ে উপজেলা শহরের বিভিন্ন বিদ্যালয় ও কলেজে লেখাপড়া করে। নদীর ওপর সেতু না থাকায় অনেকে বর্ষাকালে বিদ্যালয় ও কলেজে যেতে চায় না। বাঁশের সাঁকোটি নড়বড়ে হয়ে গেছে। এ কারণে সাঁকোর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

জোংড়া ইউনিয়নের মোমিনপুর গ্রামের কৃষক আল আমিন বলেন, ৩০০ গজের এই সাঁকোর ওপর দিয়ে গেলে পাটগ্রাম উপজেলা শহরের দূরত্ব ছয় কিলোমিটার। কৃষিপণ্য নিয়ে সাঁকোর ওপর দিয়ে চলাচল করা যায় না। এ কারণে ছয় কিলোমিটারের পথ কাঁচা-পাকা পথ ১২ কিলোমিটার পথ ঘুরে কৃষিপণ্য নিয়ে উপজেলা শহরের রসুলগঞ্জ হাটে যেতে হয় পাকা সড়কে। এতে তাঁদের পণ্য বহনে খরচ বেড়ে যায়।