নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের বিচার দ্রুত শেষ করার দাবি

নারায়ণগঞ্জে সাত খুন মামলার রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণেছবি: প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুন মামলার বিচার দ্রুত শেষ করার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন আইনজীবী ও নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা। ওই ঘটনার ১০ বছর পূর্তিতে আজ রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

সাত খুন মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের ভাগনে প্রিয়তম কুমার দেব, নিহত মনিরুজ্জামানের (স্বপন) গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী সামসুন নাহার (নুপুর) প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সামসুন নাহারের মেয়ে রওজা মনি, নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের সহযোগী তাজুল ইসলামের ছোট ভাই রাজু আহমেদ প্রমুখ।

মানববন্ধনে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সব প্রতিবন্ধকতা দূর করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আপিল বিভাগে মামলার শুনানির ব্যবস্থা করতে হবে এবং অবিলম্বে আসামিদের শাস্তি কার্যকর করতে হবে। বিচারের রায় কার্যকর হলে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার, নারায়ণগঞ্জবাসীসহ দেশের মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারবেন। দেশে আইনের শাসন আছে কি না, এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের মাধ্যমে তার প্রমাণ হবে।

আরও পড়ুন

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের লিংক রোডের লামাপাড়া এলাকা থেকে সিটি করপোরেশনের তৎকালীন প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ পাঁচজনকে অপহরণ করা হয়। বিষয়টি দেখে ফেলায় নারায়ণগঞ্জের আইনজীবী চন্দন সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহিমকেও অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে সাতজনের লাশ পাওয়া যায়। ওই ঘটনায় হওয়া দুই মামলায় ২০১৬ সালের ১৬ জানুয়ারি ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন নারায়ণগঞ্জের আদালত। রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন দণ্ডিত ব্যক্তিরা। আপিলের রায়ে ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল এবং অপর ১১ আসামির দণ্ড পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া ৯ আসামির দণ্ড বহাল থাকে।

আজকের মানববন্ধনে আদালতের রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান নিহত জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী সামসুন নাহার। তিনি বলেন, ‘স্বামী হত্যার বিচার চাই। জড়িত আসামিদের ফাঁসি ও সাজা কার্যকর করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’

আইনজীবী প্রিয়তম কুমার দেব বলেন, সাত খুনের মামলায় যে রায়গুলো হয়েছে, সেগুলো খুব দ্রুত হয়েছে। কিন্তু আপিল বিভাগে এমন কোনো কারণ নেই যাতে বছরের পর বছর মামলাটি ঝুলে রয়ে গেল। আইনজীবী চন্দন সরকারের বিচার দেখতে না পেয়ে তাঁর স্ত্রী মারা গেছেন। সাত খুনে নিহত অন্য অনেকের স্বজন মারা গেছেন।