বাবাকে দেখতে হাসপাতালে যাওয়ার পথে সড়কে প্রাণ গেল মেয়ের, স্বামী ও ছেলে আহত

মো. আমিনুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে মুনতাসীর
ছবি: সংগৃহীত

বাবা স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ) করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এমন খবর পেয়ে একমাত্র মেয়ে নুসরাত জাহান (২৫) তাঁর স্বামী ও তিন বছরের ছেলেকে নিয়ে ঢাকা থেকে বাসে করে বরিশালে যাচ্ছিলেন। কিন্তু বাবাকে আর দেখা হলো না নুসরাতের।

গতকাল বৃহস্পতিবার মাদারীপুরের শিবচরের সূর্যনগর এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কে (ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে) ট্রাক ও বাসের সংঘর্ষে মারা যান নুসরাত জাহানসহ চারজন। আহত হন নুসরাতের স্বামী আমিনুল ইসলাম, ছেলে মুনতাসীরসহ ২০ জন। নিহত নুসরাত জাহান পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার উত্তর ঝাটিবুনিয়া গ্রামের মো. আমিনুল ইসলামের স্ত্রী। তাঁর বাবার বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালীশুড়ি ইউনিয়নের পাতিলা গ্রামে।

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত আমিনুল ইসলাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন
ছবি: সংগৃহীত

নিহত অপর তিনজন হলেন ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার জুরকাঠী এলাকার আবদুস সালাম মিয়ার ছেলে মো. রিয়াজুল ইসলাম (৩৮), বরিশালের উজিরপুর উপজেলার নারিকেলী এলাকার নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে স্বপন বাড়ৈ (৪৪) ও সিরাজগঞ্জ সদরের আতাউর রহমানের ছেলে মাহাবুবুর রহমান (২৮)।

নুসরাতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নুসরাত জাহান তাঁর একমাত্র ছেলে মুনতাসীর ও প্রকৌশলী স্বামী মো. আমিনুল ইসলামকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করে আসছিলেন। গত মঙ্গলবার নুসরাতের বাবা মো. জাকির হোসেন তালুকদার স্ট্রোক করে বরিশাল শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। খবর পেয়ে স্বামী-সন্তানকে নিয়ে গতকাল ঢাকা থেকে বরিশালের পথে রওনা হন নুসরাত। হানিফ পরিবহনের বাসটি শিবচরের সূর্যনগর এলাকায় পৌঁছালে একটি ট্রাকের সঙ্গে বাসটির সংঘর্ষে দুর্ঘটনাটি ঘটে। আহত মো. আমিনুল ইসলাম ও শিশু মুনতাসীর বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আহত মো. আমিনুল ইসলামের চাচাতো ভাই আবদুল বারেক প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নুসরাতের বাবা মো. জাকির হোসেন তালুকদারকে মেয়ের মৃত্যুর খবর এখনো দেওয়া হয়নি। আর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন নুসরাতের স্বামীকেও জানানো হয়নি স্ত্রীর মৃত্যুর সংবাদ। স্বজনেরা কেউ ঢাকার পথে রওনা হয়েছেন। আবার কেউ নুসরাতের দাফনের কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনার মুখোমুখি হতে হবে, তাঁরা ভাবতেই পারছেন না।