প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন দিতে চান, কিছু উপদেষ্টা আর ছাত্ররা ভুল বোঝায়: হাফিজ উদ্দিন

ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলা বিএনপির ত্রি–বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ। রোববার দুপুরে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে
ছবি: প্রথম আলো

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমদ (বীরবিক্রম) বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন দিতে চান, কিছু কিছু উপদেষ্টা আর ছাত্ররা তাঁকে ভুল বোঝায়। রোববার দুপুরে ভোলায় তজুমদ্দিন উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সাবেক মন্ত্রী ও ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দেশবরেণ্য জগদ্বিখ্যাত ব্যক্তি, ভালো মানুষ, তাঁর প্রথমে ইচ্ছা ছিল না, এখন তিনি নির্বাচন দিতে চান, লন্ডনে তিনি আমাদের নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারপর তিনি ওপেন হয়েছেন, নির্বাচন দিতে চান, কিছু কিছু উপদেষ্টা তাঁকে আবার ভুল বোঝায়। আর ছাত্ররা তো আছেই, আমরা একটু স্বাভাবিক হই, আমরা এখনো কমিটি করতে পারি নাই। এইটা করতে পারি নাই, এখনো তাদের দলের রেজিস্ট্রেশনই হয় নাই, তাহলে তোমরা কীভাবে ক্ষমতায় যাবিরে ভাই।’

কিছু উপদেষ্টা ও ছাত্রদের গড়া দলসহ ছোট দলগুলোর সমালোচনা করে হাফিজ উদ্দিন আরও বলেন, ‘যে গণতন্ত্রের জন্য শহীদ আবু সাঈদ জীবন দিয়েছেন। আশা ছিল অন্তর্বর্তী সরকার এসে সেই গণতন্ত্র চালু করবে। কিন্তু তাঁরা নির্বাচন দিতে খালি গড়িমসি করে। দেশে একধরনের দল আছে, বাংলাদেশে ৩৫টি রাজনৈতিক দল। অনেকগুলো হোন্ডাপার্টি, হাজবেন্ড আর ওয়াইফ আছে, আর কেউ নেই। দুই-একটা আছে সিএনজিপার্টি, তিনজন বসলে আর সিট নেই। হাজবেন্ড-ওয়াইফ আর পোলা একটা আছে। এরা এসে খালি ভাষণ দেয়, আর সংস্কারের কথা বলে। এইটা বলে, ওইটা বলে।’

জাতীয় নাগরিক পার্টি ও দলটির নেতাদের বিষয়ে হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘এরা তো আমাদের নাতির বয়সী। এ দলটা উঠুক আমরা চাই। এ দলটা যেহেতু তারা তরুণ, আস্তে আস্তে প্র্যাকটিস করুক, একসময় তাদের রাজনীতিতে বয়স হলে নাবালকত্ব কাটিয়ে সাবালকে উপনীত হলে তারা সরকার গঠন করতেও পারে। আমাদের শুভকামনা থাকল। এত আগে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের গালাগালি করার দরকার নেই।’

তজুমদ্দিন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব ওমর আসাদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের রহমত উল্যাহ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী (আলমগীর), সদস্যসচিব রাইসুল আলম, ভোলা জেলা জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের সভাপতি কামাল উদ্দিন প্রমুখ।

গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগের সমালোচনার পাশাপাশি গত ১৬ বছরে বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রাম নিয়েও কথা বলেন হাফিজ উদ্দিন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পটভূমি বিএনপিই তৈরি করেছে বলে তিনি দাবি করেন।

সম্মেলনে প্রথম অধিবেশনের পর শুরু হয় দ্বিতীয় অধিবেশন। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবীর সভাপতিত্বে উপস্থিত ডেলিগেটদের কণ্ঠভোটে গোলাম মোস্তফাকে (মিন্টু) সভাপতি ও ওমর আসাদকে (রিন্টু) সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। তাঁদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে কেন্দ্রে পাঠাতে বলা হয়েছে। এর আগে তজুমদ্দিন উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়েছিল ১৩ বছর আগে। সেই কমিটিকে সভাপতি ছিলেন মহিবুল্লাহ নাগর। সাধারণ সম্পাদক ছিলেন জাকির হোসেন হাওলাদার। দুই বছর আগে এই কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।