কুয়েতে বসে সিসিটিভিতে দেখলেন বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টা, ডাকাত তাড়ালেন প্রবাসী যুবক

ডাকাতিপ্রতীকী ছবি

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নের পূর্ব কাবিলপুর গ্রাম। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ওই গ্রামেরই কামাল পাটোয়ারির বাড়িতে সশস্ত্র ডাকাত দল হানা দেয়। কামাল পাটোয়ারির ছেলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েতে থাকেন। সেখানে বসেই তিনি মুঠোফোনে সিসিটিভিতে দেখতে পান, বাড়ির প্রধান ফটক ভাঙার চেষ্টা করছে ডাকাতের দল। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি প্রতিবেশীদের জানান তিনি। প্রতিবেশী ও আশপাশের মানুষের চিৎকারে চারদিক থেকে লোকজন জড়ো হয়ে যায়। আর এসব দেখে পালিয়ে যায় ডাকাত দল।

সম্প্রতি নোয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। গতকাল রাতে কেবল সেনবাগের কাবিলপুর ইউনিয়নেরই দুটি গ্রামের তিনটি বাড়িতে ডাকাতেরা হানা দেয়। দুটি বাড়িতে সফলভাবে লুটপাট করতে পারলেও সিসিটিভির কারণে কামাল পাটোয়ারির বাড়িতে ঢুকতে পারেনি ডাকাত দল।

কাবিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তোফাজ্জল হোসেন প্রথম আলোকে জানান, কয়েক মাস আগে বাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়েছিলেন কামাল পাটোয়ারি। গতকাল রাতে যখন ডাকাতেরা বাড়ির প্রধান ফটক ভাঙার চেষ্টা করছিল, তখন ওয়াই–ফাই ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিদেশে থাকা কামাল পাটোয়ারির ছেলে আবদুল হাই মুঠোফোন সেটে পুরো ঘটনাই দেখতে পান। তখন তিনি তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের ফোন করে বিষয়টি জানান। এরপর বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা অনেকেই ডাকাত, ডাকাত বলে চিৎকার করলে ডাকাতেরা পালিয়ে যায়।

‍এর আগে গতকাল দিবাগত রাতে উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নের মইজদীপুর ও কাবিলপুর গ্রামে দুটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সশস্ত্র ডাকাতেরা দুই বাড়ির লোকজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা, সোনার গয়নাসহ মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে সেনবাগ থানার পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দিবাগত রাত একটার দিকে ৮-১০ জন মুখোশ পরা ডাকাত কাবিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল হকের মইজদীপুর গ্রামের বাড়িতে হানা দেয়। তারা বাড়ির বসতঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে থাকা পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৮ ভরি সোনার গয়না লুট করে নিয়ে যায়। এরপর ডাকাতেরা সিরাজুলের বড় ভাই আবদুল খালেকের তালাবদ্ধ ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে মালামাল তছনছ করে। তবে সেখান থেকে কিছু লুট হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।

এ ঘটনার পর রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে দিকে একই ইউনিয়নের পূর্ব কাবিলপুর গ্রামের তফাদার বাড়ির বাসিন্দা ও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য হুমায়ুন কবিরের নতুন বাড়িতে হানা দেয়। তারা বসতঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে আনুমানিক ১০ ভরি সোনার গয়না, নগদ ১ লাখ ২১ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

ডাকাতির খবর পেয়ে বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ কে এম ইমরান খান, সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ তিনটি বাড়ি পরিদর্শন করেছে। ওসি এস এম মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে ডাকাতির সত্যতা পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগপ্রাপ্তি সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।