ফজলুল কাদেরের নামে প্রস্তাবিত ছাত্র হলের নামকরণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতারা। আজ দুপুরে চট্টগ্রামের ষোলোশহর রেলওয়ে স্টেশনেপ্রথম আলো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জন্য প্রস্তাবিত হলের নামকরণ একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডিত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরী নামে করার প্রতিবাদ জানিয়েছেন চবি ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা। আগামী এক মাসের মধ্যে তাঁরা এই সিদ্ধান্ত বাতিলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সময় বেঁধে দিয়েছেন। পাশাপাশি প্রস্তাবিত হলটি বিজ্ঞানী জামাল নজরুল ইসলামের নামে নামকরণ করার দাবিও জানিয়েছেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতা–কর্মীরা।

আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তাঁরা। নগরের ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশনে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ইফাজ উদ্দিন আহমদ। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ফজলুল কাদের চৌধুরীর গুডস হিলের বাড়ি চট্টগ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের নির্যাতনের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর নৌযানে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় আনোয়ারা উপজেলায় গহীরা উপকূলে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ধরা পড়েন তিনি। মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠনের অভিযোগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী ছিলেন তিনি।’

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, যিনি সরাসরি মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন,  তাঁর নামে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন আবাসিক হলের নামকরণের সিদ্ধান্ত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। অবিলম্বে স্বাধীনতাবিরোধী ফজলুল কাদের চৌধুরীর নাম বাতিল করতে হবে। এই হলের নাম বিজ্ঞানী জামাল নজরুল ইসলাম ঘোষণা করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি সুদীপ্ত চাকমা, সাংগঠনিক সম্পাদক নয়ন কৃষ্ণ সাহা, শিক্ষা ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক সোহেল রানা, প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক অমৃতা চাকমা, সদস্য জেস চাকমা ও চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক শুভ দেবনাথ প্রমুখ।

এক প্রশ্নের উত্তরে সুদীপ্ত চাকমা বলেন, গতকাল তাঁরা প্রস্তাবিত হলের নাম পরিবর্তনের জন্য প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছেন। তাঁরা প্রশাসনকে এক মাসের সময় দিচ্ছেন। এর মধ্যে দাবি না মানা হলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে তাঁরা কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি দেবেন।

এর আগে গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সিন্ডিকেট সভায় ছাত্রদের জন্য নতুন একটি হল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। উত্তর ক্যাম্পাস এলাকায় পুরোনো শামসুননাহার হলের জায়গায় প্রস্তাবিত হলের নামকরণ করা হয়েছিল ফজলুল কাদের চৌধুরী হল। পাশাপাশি এই সভায় আরও ছয়টি স্থাপনার নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল।