বরগুনায় বিএনপির সমাবেশে যেতে পুলিশের বাধা, খেয়া পারাপার বন্ধ

বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষে বরগুনা শহরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। শুক্রবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

বরগুনা জেলা বিএনপির সমাবেশে যাওয়ার সময় আমতলী, তালতলী, বেতাগী ও বামনা উপজেলার নেতা–কর্মীদের পুলিশ বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া জেলা সদরের সঙ্গে চার উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ চারটি খেয়াঘাট নিশানবাড়িয়া, বড়ইতলা, আমতলী ও বামনা বন্ধ রাখা হয়েছে।

জেলা ও এসব উপজেলার বিএনপির নেতা–কর্মীরা এ অভিযোগ করেছেন। তবে পুলিশের দাবি, খেয়া পারাপার বন্ধের বিষয়ে তারা কিছু জানে না। কোথাও বিএনপির নেতা–কর্মীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে না।

১০ দফা দাবি আদায়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার বেলা তিনটায় শহরের পুরোনো লঞ্চঘাট এলাকায় এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এতে প্রধান অতিথি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। এ উপলক্ষে শহরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

দুটি খেয়াঘাটের দুই ইজারাদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, সকাল থেকে বরগুনা সদর উপজেলার সঙ্গে বেশ কয়েকটি খেয়াঘাটে পারাপার বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া কয়েকটি খেয়াঘাটে পারাপার সীমিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কথা বলতে বরগুনার পুলিশ সুপার আবদুস ছালামের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ধরেননি। তবে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কোনো ঘাটে খেয়া চলাচল বন্ধ করিনি।’

দলীয় নেতা–কর্মীদের নিয়ে জেলা বিএনপির জনসমাবেশে আসার পথে বামনা খেয়াঘাটে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন বলে জানিয়েছেন বামনা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ।

তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘নেতা–কর্মীদের নিয়ে বামনা খেয়াঘাটে গেলে সেখানে বামনা থানার ওসির নেতৃত্বে আমাদের বাধা দেওয়া হয়। খেয়া পারাপারও বন্ধ করা হয়। পরে বিকল্প পথে অল্পসংখ্যক নেতা–কর্মী নিয়ে বরগুনায় আসি।’

বামনা থানার ওসি মো. মাইনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে আমরা বামনা খেয়াঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহন চেক করেছি। বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষে কিছু করা হয়নি।’

আমতলী উপজেলা থেকে পাঁচ শতাধিক নেতা–কর্মী বরগুনার উদ্দেশে আমতলী ফেরিঘাটে গেলে পুলিশ তাঁদের বাধা দেন বলে জানিয়েছেন আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব তুহিন মৃধা।

তিনি বলেন, ‘নেতা–কর্মী নিয়ে পায়রা ঘাটে আসামাত্র পুলিশ খেয়া চলাচল বন্ধ করে দেয়। এরপর নেতা–কর্মীদের নিয়ে ফিরে যাই। আমি অন্য মাধ্যমে বরগুনায় এসেছি।’

অভিযোগ অস্বীকার করেন আমতলী থানার ওসি এ কে এম মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, তাঁরা মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আসছেন। এটিও মিথ্যা অভিযোগ।

একইভাবে তালতলী ও বেতাগী উপজেলা থেকে বিএনপির নেতা–কর্মীদের আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশ উপলক্ষে সকাল থেকে জেলার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বারগুলোতে বিএনপির নেতা–কর্মীদের প্রবেশে বাধা দিচ্ছে পুলিশ। নৌপথে খেয়া পারাপার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাথরঘাটা থেকে আসার সময় একটি লঞ্চ আটকে দেওয়া হয়। বামনায় নেতা–কর্মীদের ট্রলার ছাড়তে দেওয়া হয়নি।