সিংড়ায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ১৩, আটক ৯

সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিদের সিংড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আজ বেলা সাড়ে ১১টায় তোলা
ছবি: প্রথম আলো

নাটোরের সিংড়া উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১৩ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ছাড়া মারপিটে আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। আজ শনিবার সকাল ছয়টা থেকে ১০টা পর্যন্ত উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের বেড়াবাড়ি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে সিংড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় নয়জনকে আটক করেছে পুলিশ।

এ সম্পর্কে আজ দুপুরে সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব বিরোধ নিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। তাঁদের শরীরের ক্ষতস্থান দেখে মনে হয়েছে শটগানের গুলিতে তাঁরা আহত হয়েছেন। তবে ঘটনাস্থল থেকে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া যায়নি।

ডাহিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সিরাজুল মজিদ বলেন, আধিপত্য বিস্তার এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। তিনি হাসপাতালের আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার ব্যবস্থা নিয়ে ব্যস্ত আছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বেড়াবাড়ি গ্রামে খাসজমির দখল নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এক পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহদপ্তর সম্পাদক রেজাউল করিম, তাঁর ভাই সাইফুল ইসলাম এবং ডাহিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ও ইউপি সদস্য মানিক হোসেন।  অপর পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন স্থানীয় ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। এর জের ধরে আজ শনিবার ভোরে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। পরে তা মুখোমুখি সংঘর্ষে রূপ নেয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন শামীম হোসেন (৩০), সবুজ আলী (৩২), রিপন আলী (২৮), আবদুল মান্নান (৫৫), আবদুর রউফ (৩০), লাকী হোসেন (২৬), সাইদুল ইসলাম (২৭), বাবু ইসলাম (৪৫), নয়ন আলী (২৪), আমিরুল ইসলাম (৭৫), মোজাম্মেল হোসেন (৫৫), জামাল হোসেন (২৪) ও  শিরিনা খাতুন (২৫)

সিংড়া উপজেলার বেড়াবাড়ি গ্রামে আজ সকালে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। আজ সকাল সাড়ে নয়টায় তোলা
ছবি: প্রথম আলো

একপক্ষের নেতৃত্বে থাকা রেজাউল করিম বলেন, জরুরি কাজে তিনি নাটোরে আছেন। তিনি ও তাঁর ভাই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। আর ইউপি সদস্য মানিক হোসেন বলেন, ‘আমি গ্রামে থাকি না। তবে তাঁর পক্ষেরও বেশ কয়েকজন আহত রয়েছেন।’

অপর পক্ষের আনোয়ার হোসেন বলেন, সাইফুল ও মানিক মেম্বারের নেতৃত্বে তাঁর পক্ষের লোকজনের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। তাঁর পক্ষের ১৬ জন আহত হয়েছেন।

সিংড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মইনুল হক বলেন, গুরুতর আহত ১১ জনকে বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। অন্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।