‘ভোটের আনন্দ যেন হারায় গেছে’

বগুড়ার শেরপুরে উপজেলার একটি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারী ছাড়া তেমন ভোটার দেখা যায়নি। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে লাঙ্গলমোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে।ছবি: প্রথম আলো

‘আগে অনেক ভোট দিছি। তহন ভোটে কত আনন্দ করিছি! এহন ভোটকেন্দ্রে ভোটার নাই, আনন্দ যেন হারায় গেছে।’ বগুড়ার শেরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট দিতে এসে কথাগুলো বলছিলেন ৭৫ বছর বয়সী ভোটার রেজিয়া খাতুন।

চতুর্থ ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আজ বুধবার শেরপুরে ভোট গ্রহণ চলছে। উপজেলার সীমাবাড়ি ইউনিয়নের বেটখৈর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আজ দুপুরে ভোট দিতে আসেন রেজিয়া।

সরেজমিনে দেখা যায়, আজ দুপুর পর্যন্ত ওই ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের তেমন উপস্থিতি ছিল না। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ২ হাজার ৭১৫ জন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্রে সাড়ে ৯ শতাংশ ভোট পড়েছে।

সীমাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র থেকে বের হতেই দেখা হয় বেটখৈর গ্রামের বৃদ্ধ ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে। তিনিও জানালেন, এই নির্বাচনে ভোট নিয়ে কোনো আনন্দ নেই। তিনি বলেন ‘আগে দেখিছি ভোট দেওয়ার দিন কেন্দ্রের সামনে মেলা বসে যেত। এখন দেখিছি তা–ও নাই।’

আগে দেখিছি ভোট দেওয়ার দিন কেন্দ্রের সামনে মেলা বসে যেত। এখন দেখিছি তা–ও নাই।
বেটখৈর গ্রামের ভোটার ইসমাইল হোসেন

লাঙ্গলমোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও তেমন ভোটার দেখা যায়নি। কেন্দ্রটির মোট ভোটারের সংখ্যা ২ হাজার ১২১ জন। সেখানে বেলা ১২টা পর্যন্ত ১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানান কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং অফিসার মো. ফরহাদুজ্জামান।

ভোটকেন্দ্রটির পাশেই গ্রামীণ সড়কে দেখা হয় ভ্যানচালক সাইফুল ইসলাম ও কৃষক লাভলু তালুকদারের সঙ্গে। তাঁরা জানান, আগে গ্রামের মানুষ তাঁদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইত এবং নানা জারি-সারি গানের সুর তুলত। এখন আর এসব শোনা যায় না। ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে আনন্দ কমে গেছে।

তবে ভোটের আনন্দ আবারও ফিরে পেতে চান সীমাবাড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দারা। এমনটিই বলছিলেন স্থানীয় কয়েকজন কৃষক ও ব্যবসায়ী।

বেটখৈর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোটার শূণ্য একটি কক্ষ। আজ দুপুর ১২টার দিকে।
ছবি: প্রথম আলো

শেরপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপজেলার ১০৭টি ভোটকেন্দ্রে ১৩ শতাংশ ভোট পড়েছে।

উপজেলার সুঘাট ও সীমাবাড়ি ইউনিয়নের চারটি ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা বলেন, ভোট কেন্দ্রগুলোয় সকাল থেকেই ভোটারদের উপস্থিতি তেমন নেই। তবে আশা করা হচ্ছে, দুপুরের পর কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে।

শেরপুর উপজেলার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোট ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের চারজন ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতি করেন।