জয়পুরহাট সদর থানা থেকে লুট হওয়া ১৪ অস্ত্র ও ১১০০ গুলি পাঁচ মাসেও উদ্ধার হয়নি
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন গত ৫ আগস্ট জয়পুরহাট সদর থানার অস্ত্রাগার থেকে লুট হওয়া ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র ও প্রায় ১ হাজার ১০০ গুলির এখনো হদিস পাওয়া যায়নি। তবে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব বলেছেন, তাঁরা থানার লুট হওয়া অস্ত্রগুলো উদ্ধারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন।
জেলা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর ওই দিন সন্ধ্যায় বিক্ষুব্ধ লোকজন জয়পুরহাট সদর থানায় হামলা করেন। এ সময় ওসিসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা থানায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদের থানা থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন। এ সময় গুলিতে মেহেদি নামের এক যুবক নিহত হন। বিক্ষুব্ধ লোকজন থানার ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাটের পর আগুন ধরিয়ে দেন। ওই দিন থানার অস্ত্রাগার থেকে ৫১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করা হয়। এ পর্যন্ত মোট ৩৭টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার র্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পের সদস্যরা সদর উপজেলার খঞ্জনপুর ঝাউবাড়ি এলাকা থেকে রাইফেলের এক ডজন গুলি উদ্ধার করে। এসব গুলি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যাব জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া গুলিগুলো জয়পুরহাট সদর থানা থেকে লুট করা হয়েছিল। কেউ গুলিগুলো লুকিয়ে রেখেছিল। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহেদ আল-মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ৫ আগস্ট থানার অস্ত্রাগার ভেঙে আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করা হয়। লুট হওয়া বেশির ভাগ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এখনো ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১ হাজার ১০০ গুলি উদ্ধার করা যায়নি। ওই ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে ৬টি থানা-পুলিশের ও ৮টি জনগণের। আগ্নেয়াস্ত্রগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, থানার লুটের পাঁচ মাস হচ্ছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ আগ্নেয়াস্ত্র পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে। অর্থাৎ যাঁরা আগ্নেয়াস্ত্রগুলো নিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁরা নিজেরাই বিভিন্ন স্থানে রেখে গেছেন। তাঁরাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অথবা গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনকে জানিয়েছেন। সেই অস্ত্রগুলো উদ্ধার হয়েছে। এত দিনেও অবশিষ্ট আগ্নেয়াস্ত্র যাঁরা ফেরত দেননি, তাঁদের উদ্দেশ্য ভালো নয়।
তবে জয়পুরহাট জেলা পুলিশের দায়িত্বে যোগদানের পর থেকেই সদর থানার লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে জোর দিয়েছেন বলে দাবি করেন এসপি মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেখানে গিয়েছি, সেখানে লুট হওয়া অস্ত্রের কথা বলেছি। এখনো ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা যায়নি। এর মধ্যে পুলিশের পাঁচটি পিস্তল ও একটি চায়না রাইফেল রয়েছে। পুলিশ আগ্নেয়াস্ত্রগুলো উদ্ধারের সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।’