মাদারীপুরে টাকা নেওয়ার ভিডিও ফাঁস, দুই পুলিশ কনস্টেবল বরখাস্ত

ঘুষ
প্রতীকী ছবি

মাদারীপুরে এক নারী পুলিশ কনস্টেবলের টাকা লেনদেনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ওই নারী কনস্টেবল নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে এক চাকরিপ্রত্যাশীর কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এ ঘটনায় দুই পুলিশ কনস্টেবলকে গত বৃহস্পতিবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

ওই দুই পুলিশ সদস্য হলেন তানজিলা আক্তার ও শহিদুল ইসলাম। তাঁদের মধ্যে তানজিলা মাদারীপুর সদর মডেল থানাধীন আদালত পুলিশে কর্মরত ছিলেন। আর শহিদুল ইসলাম মাদারীপুর পুলিশ লাইনসে দায়িত্ব পালন করতেন।

অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে পুলিশ কনস্টেবল তানজিলা আক্তার বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমার নামে অভিযোগ করার পরে সবকিছু এসপি স্যারকে জানিয়েছি। তিনি সব জানেন।’ আর শহিদুল ইসলাম বলেন, টাকা লেনদেনের সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তাঁকে শুধু শুধু হয়রানি করা হচ্ছে।

জেলার পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ২০২২ সালে ওই দুই পুলিশ সদস্য এক চাকরিপ্রত্যাশীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন। কিন্তু পুলিশ নিয়োগ স্বচ্ছতার সঙ্গে হওয়ায় ওই ব্যক্তির নিয়োগ হয়নি। এরপর ২০২৩ ও ২০২৪ সালেও ওই ব্যক্তি চাকরির জন্য পরীক্ষা দেন। কিন্তু তিনি উত্তীর্ণ হননি। পরে ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তি দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে তাঁদের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের পর পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। এরপর গত বৃহস্পতিবার তাঁদের দুজনকেই সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাসহ মামলা প্রক্রিয়াধীন।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ সদস্য তানজিলা আক্তার একটি দোকানে আছেন। সেখানে একজন এসে তাঁকে এক হাজার টাকার কয়েকটি বান্ডিল দিচ্ছেন। জানা গেছে, দোকানটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে। ২০২২ সালের ১ মার্চের ভিডিও এটি।

ভুক্তভোগী চাকরিপ্রত্যাশীর নাম রতন দাস। তিনি বলেন, তিনি মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের ছোট বাড্ডা এলাকার বাসিন্দা। তিনি দোকানে কাজ করেন। দোকানে বসে তাঁর পরিচয় হয় পুলিশ কনস্টেবল তানজিলা আক্তারের সঙ্গে। পরে পুলিশের ‘ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি)’ নিয়োগের সময় তানজিলা আক্তার চাকরির আশ্বাস দিয়ে রতনের কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা নেন। সর্বশেষ ২০২৪ সালের পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষায় সুযোগ না পেয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েন তিনি। উপায় না পেয়ে দুই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।

রতন আরও বলেন, ‘আমার দেওয়া ১৪ লাখ টাকা দিয়ে তানজিলার স্বামী ফরিদপুরের ভাঙ্গাতে ব্যবসা শুরু করেছেন। টাকা ফেরত চাইলে তিনি নানা টালবাহানা শুরু করেন। পরে উপায় না পেয়ে আমি পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে সবকিছু খুলে বলি।’