গাজীপুরে ‘স্ত্রীকে হত্যা’র ১০ মাস পর যুবক গ্রেপ্তার, আদালতে স্বীকারোক্তি

গাজীপুর জেলার মানচিত্র

গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। শনিবার দুপুরে গাজীপুর পিবিআইয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গাজীপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান প্রথম আলোকে বলেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। হত্যাকাণ্ডের ১০ মাস পর গ্রেপ্তার মো. মাসুদ রানা (৩৭) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

২৫ মে বিকেলে টঙ্গীর আরিচপুর এলাকা থেকে মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, স্ত্রী বুলবুলি বেগমের (৩৪) মুঠোফোনে কথা বলা নিয়ে স্বামী মাসুদ রানার সন্দেহ হয়। এ ঘটনায় গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর রাতে ঝগড়া হলে তাঁকে মারধর করেন স্ত্রী। একপর্যায়ে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন তিনি।

মাসুদ নওগাঁর রানীনগরের উত্তর রাজাপুর গ্রামের মো. ফিরোজ সিকদারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী বুলবুলি বেগম বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুর থানার বামনসাতা গ্রামে। তাঁরা গাজীপুরের কোনাবাড়ীর দেওয়ালিয়াবাড়ী কলেজ গেট এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। বুলবুলি পোশাক কারখানার শ্রমিক ছিলেন এবং মাসুদ রিকশা চালাতেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজীপুর পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জামাল উদ্দিন বলেন, সাত বছর আগে মাসুদ ও বুলবুলির বিয়ে হয়। তাঁদের মধ্যে মাঝেমধ্যে ঝগড়া হতো। গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর সকালে বাসায় ছিলেন বুলবুলি ও মাসুদ। রাত সাড়ে ৯টায় বুলবুলি তাঁর বড় বোন আছিয়া আক্তারকে মুঠোফোনে কল করে দ্রুত তাঁদের বাসায় যেতে বলেন। আছিয়া গিয়ে দরজা বাইরে থেকে বন্ধ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। এরপর পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে মেঝেতে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় বুলবুলির লাশ উদ্ধার করে। পরদিন বুলবুলির ছোট ভাই কোনাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন।

আদালতে দেওয়া মাসুদের জবানবন্দির বরাত দিয়ে এসআই জামাল উদ্দিন বলেন, বুলবুলি অনেক বেশি মুঠোফোনে কথা বলায় মাসুদ রানার সন্দেহ হতো। এটা নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া হতো তাঁদের। গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর রাতে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে মাসুদকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন বুলবুলি। এর জেরে বুলবুলিকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন মাসুদ। এরপর দরজায় তালা দিয়ে পালিয়ে যান তিনি।