কর্মসূত্রে পরিচয়, পাবনায় এসে বিয়ে করলেন মালয়েশিয়ার তরুণী

পাবনার সুজানগরে এসে বাংলাদেশি রায়হান মণ্ডলের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন মালয়েশিয়ার তরুণী নূর শাহিদা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

এবার প্রেমের টানে বাংলাদেশে এসেছেন মালয়েশিয়ার এক তরুণী। ঘর বেঁধেছেন ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে। গত রোববার রায়হান মণ্ডলের সঙ্গে মালয়েশিয়া থেকে পাবনার সুজানগরে আসেন ওই তরুণী। এরপর সোমবার রাতে তাঁরা বিয়ে করেন।

রায়হান মণ্ডল (৩০) সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের তারাবাড়িয়া নতুনপাড়া গ্রামের সামাদ মণ্ডলের ছেলে। মালয়েশিয়া থেকে আসা ওই তরুণীর নাম নূর শাহিদা (২৭)। তিনি মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের বাসিন্দা। এদিকে বিদেশি মেয়ে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামে এসে বিয়ে করার ঘটনা এলাকায় আলোচনার জন্ম দিয়েছে। আশপাশের এলাকার উৎসুক মানুষ নবদম্পতিকে দেখতে ভিড় করছেন।

রায়হান মণ্ডল বলেন, প্রায় সাত বছর আগে জীবিকার তাগিদে তিনি মালয়েশিয়ায় পাড়ি দেন। শুরুতে সেখানকার একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতেন। এরপর কুয়ালালামপুরে একটি পোশাকের দোকান দেন। সেই দোকানে নূর শাহিদার সঙ্গে তাঁর পরিচয়। পরে সেটি ভালোবাসার সম্পর্কে গড়ায়। তিন বছরের সম্পর্কের পর তাঁরা দুজন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন এবং বিষয়টি দুই পরিবারকে জানান। প্রথমে দুই পরিবার বিয়েতে অসম্মতি জানালে পরে রাজি হয়। উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাঁরা দেশে এসে বিয়ে করেন। তাঁদের বিয়ের দেনমোহর করা হয়েছে ১ লাখ টাকা।

রায়হান ও শাহিদার বিয়ের মধ্যস্থতা করেন একসময়ের মালয়েশিয়া প্রবাসী ও বর্তমানে তারাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আলতাব হোসেন। তিনি বলেন, তিনি মালয়েশিয়ার মালয় ভাষা জানেন। গ্রামে আসার পর মেয়েটির সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। মেয়েটি রায়হানকে বিয়ের কথা জানান। পরে দুজনের সম্মতিতে দোভাষী হিসেবে তিনি তাঁদের বিয়েতে সহযোগিতা করেন।

নূর শাহিদা মালয় ভাষায় কথা বলেন। দোভাষী হিসেবে তাঁর কথা অনুবাদ করে আলতাব হোসেন বলেন, শাহিদা রায়হানকে ভালোবেসে বাংলাদেশে এসেছেন। তিনি রায়হানকে বিয়ে করতে পেরে খুশি। বাংলাদেশ তাঁর খুব ভালো লাগছে। রায়হানের পরিবারকেও তাঁর খুব পছন্দ হয়েছে।

বিয়ের পর রায়হান মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, শাহিদা বেড়াতে খুব ভালোবাসেন। গ্রামে আসার পর প্রতিদিনই আশপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। রিকশায় ঘুরতে তাঁর খুব ভালো লাগছে। তাঁরা দুজন দুজনকে বিয়ে করতে পেরে অনেক খুশি।

রায়হানের বাবা সামাদ মণ্ডল বলেন, ‘মেয়েটি খুব বিনয়ী। ভাষা না বুঝলেও পরিবারের সবাইকে আপন করে নিয়েছে। এমন একটি মেয়ের সঙ্গে ছেলের বিয়ে হওয়ায় আমরাও খুব খুশি। আমরা মেয়েটির সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে চাই।’

সুজানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান বলেন, খবরটি তিনি শুনেছেন। খুবই আনন্দের সংবাদ। শিগগিরই তাঁরা নবদম্পতিকে আশীর্বাদ করতে তাঁদের বাড়িতে যাবেন।