বাড়িতে একাকী বাস, লাশ পচা দুর্গন্ধে জানা গেল মৃত্যুর খবর
শয়নকক্ষের মেঝেতে পড়ে আছে বিবস্ত্র মরদেহ। মরদেহের চারপাশে মাছি ভনভন করছে। পচে যাওয়া চামড়ার ওপর ঘুরে বেড়াচ্ছে পিঁপড়ার দল। দূর থেকে নাকে কাপড় চেপে মরদেহ দেখতে উঁকি দিচ্ছেন গ্রামের মানুষ।
আজ শুক্রবার বিকেলে দিনাজপুরের বিরামপুরের দিওড় ইউনিয়নের বেপারীটোলা গ্রামের একটি বাড়ি থেকে এমন একটি অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা-পুলিশ। এ সময় বাড়ির দক্ষিণ পাশের ফাঁকা জায়গায় দাঁড়িয়ে স্বজনেরা করছিলেন আহাজারি।
মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম মতিয়ার রহমান ওরফে বুদা (৬৫)। তাঁর মৃত্যুর বিষয়ে স্বজন বা প্রতিবেশীদের কেউ কিছু বলতে পারছেন না। কীভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, পুলিশও নিশ্চিত নয়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০ বছর আগে মতিয়ার রহমানের স্ত্রী মারা যান। তাঁর চার মেয়ে ও এক ছেলে। মেয়েদের সবার বিয়ে হয়েছে। আর একমাত্র ছেলে জাহিদুল ইসলাম (২০) জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার বেড়ামাইল গ্রামে খালার বাড়িতে থাকেন। মতিয়ার রহমান বাড়িতে একাই থাকতেন। মতিয়ার রহমানের সঙ্গে তাঁর ছেলেমেয়েদের তেমন যোগাযোগ হতো না। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন ধারণা করছেন, চার-পাঁচ দিন ধরে তিনি মৃত অবস্থায় পড়ে ছিলেন।
স্বজনেরা জানান, আজ বিকেলে মতিয়ার রহমানের বাড়িসংলগ্ন পূর্ব পাশের পাকা সড়কের পাশ থেকে স্থানীয় লোকজন পচা দুর্গন্ধ টের পান। তাঁরা মতিয়ার রহমানের শয়নকক্ষের জানালা দিয়ে মাছির ওড়াউড়ি দেখতে পেয়ে ভেতরে উঁকি দেন। এ সময় তাঁরা মেঝেতে তাঁর বিবস্ত্র ও অর্ধগলিত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তাঁরা থানা-পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
মতিয়ারের বড় মেয়ে জয়নব বেগম বলেন, পাশের উপজেলা নবাবগঞ্জে তাঁর বিয়ে হয়েছে। বাবার সঙ্গে তাঁর মাঝেমধ্যে মুঠোফোনে যোগাযোগ হতো। সর্বশেষ গত ১১ মে বাবার সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। আজ বিকেলে গ্রামের মানুষের কাছে থেকে বাবার মৃত্যুর খবর পান। জয়নব বলেন, বাবার সঙ্গে কারও দ্বন্দ্ব ছিল না। তাঁর বাবার মৃত্যু কীভাবে হয়েছে, সেটি জানেন না কেউই।
এ বিষয়ে বিরামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এরশাদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে, চার-পাঁচ দিন আগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তবে তাঁর মৃত্যু কীভাবে হয়েছে, সেটি এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।’