সিরাজগঞ্জে ট্রেনের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন

একতা পরিবহনের বাসটি দ্রুতগতিতে রেলক্রসিং পার হতে গেলে ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে কড্ডার মোড় এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় আজ বৃহস্পতিবার ভোরে পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে যাত্রীবাহী বাসের সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। দুপুরে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আনোয়ার হোসেন বলেন, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী সুপন আলীকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে ভোর ৪টা ১৮ মিনিটে ঢাকা-ঈশ্বরদী রেললাইনের কড্ডার মোড় এলাকার রেলক্রসিংয়ে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বাসটির সুপারভাইজার বাবুল মিয়া (৪৫) নিহত হয়েছেন। এ সময় বাসটির আরও ২৫ জন আহত হয়েছেন। হতাহত ব্যক্তিরা সবাই বাসের যাত্রী ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ দুর্ঘটনায় রাজশাহীগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। এতে ঢাকা-উত্তরাঞ্চল রুটে প্রায় আধা ঘণ্টা রেল চলাচল বন্ধ ছিল।

রেলওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভোর পাঁচটার দিকে দিনাজপুর থেকে ছেড়ে আসা তাজ পরিবহনের সাভারগামী একটি বাস কড্ডার মোড় রেলক্রসিং পার হচ্ছিল। ওই সময় রাজশাহীগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেন ওই এলাকা অতিক্রম করছিল। বাসটি দ্রুতগতিতে রেলক্রসিং পার হতে গেলে ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় ২৬ যাত্রী গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাসটির সুপারভাইজার বাবুল মিয়ার মৃত্যু হয়।

শহীদ এম মনসুর আলী রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশনমাস্টার জামাল উদ্দিন বলেন, বাসের সঙ্গে সংঘর্ষের পর পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। পরে জামতৈল স্টেশন থেকে বিকল্প ইঞ্জিন এনে তা পরিবর্তন করা হয়। এতে প্রায় আধা ঘণ্টা ঢাকা-উত্তরাঞ্চল রুটে রেল যোগাযোগ বন্ধ ছিল। দুর্ঘটনার সময় রেলক্রসিংয়ের দায়িত্বরত গেটম্যান ঘুমিয়ে ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরপর গেটম্যান আবদুল লতিফ পালিয়ে গেছেন।

জেলা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক তোফাজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল দুর্ঘটনাকবলিত এলাকা ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। এ সময় জেলা স্থানীয় সরকার বিভাগের সহকারী পরিচালক মাসুম বিল্লাহ, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুকাতে রাব্বি সঙ্গে ছিলেন।

আরও পড়ুন

তোফাজ্জল হোসেন বলেন, দুর্ঘটনার বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। হাসপাতালে চিকিৎসারত গুরুতর আহত তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর জন্য অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া হিসেবে ১০ হাজার টাকা সহায়তা করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশের (জিআরপি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ বলেন, বাবুল মিয়ার লাশটি সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে রাখা হয়েছে। গুরুতর আহত তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে রেলওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।