কটিয়াদীতে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ প্রশ্নপত্রে হয়ে গেল ভোকেশনালের এসএসসি পরীক্ষা

কিশোরগঞ্জ জেলা

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলায় বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে অধীনে একটি বিষয়ে ত্রুটিপূর্ণ প্রশ্নপত্রে এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার কটিয়াদী পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ফ্রুট অ্যান্ড ভেজিটেবল কালটিভেশন-১ (৯৪২৩) বিষয়ের প্রশ্নপত্রে এ ত্রুটি ধরা পড়ে।

ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীরা জানায়, ফ্রুট অ্যান্ড ভেজিটেবল কালটিভেশন-১ (৯৪২৩) বিষয়ে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ছয়জন। প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর শুরুতে তারা ত্রুটির বিষয়টি বুঝতে পারেনি। প্রশ্ন কমন না পড়ায় তারা সবাই হতাশ হয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারে, ফ্রুট অ্যান্ড ভেজিটেবল কালটিভেশন-১ (৯৪২৩) সিলেবাসের পরিবর্তে ফ্রুট অ্যান্ড ভেজিটেবল কালটিভেশন-১ (৯৪২৪) সিলেবাস থেকে প্রশ্ন করা হয়েছে। বিষয়টি পর্যবেক্ষকের নজরে আনা হলেও তাঁরা কোনো সমাধান দিতে পারেননি। ফলে ত্রুটিপূর্ণ প্রশ্নপত্র নিয়েই পুরো সময় পার করে দেয় পরীক্ষার্থীরা।

কটিয়াদী পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রের সচিব এ কে এম ফজলুল হক বলেন, প্রশ্নপত্রে বিষয় লেখা ঠিক আছে। কেবল প্রশ্নগুলো হয়ে গেছে অন্য একটি বিষয়ের। যে বিষয়ের প্রশ্ন ভুলে বৃহস্পতিবারের পরীক্ষায় এসে গেছে, সেই পরীক্ষা রোববার হওয়ার কথা। এতে এখন দেখার বিষয়, রোববার আবার ভুল প্রশ্নপত্র আসে কি না। এ নিয়ে তাঁরা দুশ্চিন্তায় আছেন।

করণীয় বিষয়ে কেন্দ্রসচিব বলেন, ‘পর্যবেক্ষক শিক্ষকদের মাধ্যমে ভুলটি জানার পর আমি সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষার হলে যাই এবং পরীক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলি। পরে বোর্ড কর্তৃপক্ষকে জানাই। এ ছাড়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (শিক্ষা) জানানোর পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) লিখিতভাবে জানিয়েছি। তাঁরা বোর্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমাকে জানিয়েছেন, যেকোনো একটা প্রতিকার হবে।’

জানতে চাইলে কটিয়াদীর ইউএনও খানজাদা শাহরিয়ার বিন মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হওয়ার কথা তিনি শুনেছেন। ইতিমধ্যে তিনি কারিগরি বোর্ডকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। পরীক্ষার্থীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, বোর্ড এমন কিছু সিদ্ধান্ত নেবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষতিগ্রস্ত এক শিক্ষার্থী বলে, ভালো পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি ছিল। এখন ভুল প্রশ্নপত্রের কারণে পাস নম্বর তোলা কঠিন হয়ে পড়েছে। সমস্যার সমাধান না হলে তাদের অনেকে অকৃতকার্য হবে বলে সে জানায়।

ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীরা উপজেলার হাজেরা সুলতান উচ্চবিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখার শিক্ষার্থী। ওই বিদ্যালয়ের ফ্রুট অ্যান্ড ভেজিটেবল কালটিভেশন বিষয়ের শিক্ষক পদটি শূন্য। বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ইনফরমেশন টেকনোলজি বিষয়ের শিক্ষক মুস্তারি বেগম ওই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রশ্নপত্রটি পুরোপুরি ভুল। পরের পরীক্ষার প্রশ্ন আগের পরীক্ষায় যুক্ত করে ফেলেছে। এতে পরীক্ষার্থীদের বড় ক্ষতি হয়ে গেল। পরের পরীক্ষা নিয়েও তাঁরা দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন।