নদে ড্রেজারের পাইপ, নৌযান চলাচল বন্ধ

নদটিতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে নৌযান চলাচল। এ অচলাবস্থা সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত স্থানীয় দুই জনপ্রতিনিধি ও ছাত্রলীগের এক নেতা।

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় কালীদাস সাগর নদে বসানো ড্রেজার মেশিনের পাইপ। যোগনীঘাট এলাকায়প্রথম আলো

দখল ও দূষণের কারণে এমনিতেই যায় যায় অবস্থা নদটির। বড় ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ চার–পাঁচ বছর ধরে। চলছিল ট্রলারসহ ছোট আকৃতির নৌযান। নদের এপার থেকে ওপার ড্রেজারের একটি পাইপ বসানোয় এবার তা–ও বন্ধ হয়ে গেছে।

এ চিত্র মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় কালীদাস সাগর নদের। প্রায় ১০ দিন ধরে নদে নৌযান চলাচল বন্ধ। এ অচলাবস্থা সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত স্থানীয় দুই জনপ্রতিনিধি ও ছাত্রলীগের এক নেতা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমার ট্রলারটি ছোট। সেটিই ড্রেজারের পাইপের নিচ দিয়ে আসা-যাওয়া করতে গেলে আটকে যেতে পারে। এ জন্য সেতুর নিচে ট্রলার বেঁধে রেখেছি। পাশেই আরও একটি বড় ট্রলার নোঙর করে রাখা হয়েছে।’

সরেজমিন দেখা যায়, মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেঘনা নদী থেকে দুই কিলোমিটার বালুর পাইপলাইন টেনে আনা হয়েছে যোগনীঘাট এলাকায় কালীদাস সাগর নদের পাড়ে। সেখানে পাইপ দিয়ে আসা বালু ফেলা হয় একটি স্টিলের নির্মিত বিশাল আকৃতির চৌবাচ্চায়। সেখান থেকে বালু আরও একটি পাইপ দিয়ে পাঠানো হয় মুন্সিগঞ্জ শহরের পাঁচঘড়িয়া কান্দি এলাকায়। এই পাইপ টানা হয়েছে কালিদাস নদের ওপর দিয়ে। এ অবস্থা অন্তত ১০ দিন ধরে। পাইপলাইনের পাশেই যোগনীঘাট সেতু। এ সেতুর নিচে নোঙর করে রাখা হয়েছে ট্রলারসহ কয়েকটি নৌযান।

নদের ওপর পাইপ ও ড্রেজারের দেখভালের দায়িত্বে আছেন আওলাদ হোসেন নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আওলাদ হোসেন ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাজ্জাত হোসেন ড্রেজার এনেছেন। নদের ওপর দিয়ে পাইপ বসানোর জন্য তাঁরা দেখিয়ে দিয়েছেন। সে অনুযায়ী পাইপ টানা হয়েছে।

কাউন্সিলর আওলাদ হোসেন নদের ওপর দিয়ে ড্রেজারের লাইন টানার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও শহর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন এবং সরকারি হরগঙ্গা কলেজের ছাত্রলীগ সভাপতি নিবিড় আহমেদরা ড্রেজার লাইন পরিচালনা করছেন।

পাইপ বসানোর সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ নেতা নিবিড় আহমেদ। তিনি বলেন, নদের ওপর দিয়ে পাইপ বসানোর সঙ্গে অনেকেই জড়িত। পৌরসভার প্রয়োজনে পাইপটি বসানো হয়েছে দাবি করে কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন বলেন, পৌরসভার একটি রাস্তার কাজের জন্য বালু দরকার। এ জন্য ড্রেজার পাইপ টানা হয়েছে। কাজ শেষ হলে আবারও পাইপ খুলে ফেলা হবে।

যোগাযোগ করা হলে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মো. আল জুনায়েদ জানান, নৌ চলাচল বন্ধ করে নদের ওপর দিয়ে ড্রেজারের পাইপ টানার নিয়ম নেই। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।