আল-বেরুনী হল প্রাধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে রাস্তা অবরোধ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনী হলের প্রাধ্যক্ষ সিকদার মো. জুলকারনাইনের অপসারণের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে রেখেছেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনী হলের প্রাধ্যক্ষ সিকদার মো. জুলকারনাইনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে তাঁর অপসারণের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে রেখেছেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা।

আজ বুধবার সকাল থেকে চিকিৎসাকেন্দ্র–সংলগ্ন সড়কে তিন রাস্তার মোড়ে ইট, প্ল্যাকার্ড, চেয়ার দিয়ে অবরোধ করে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী ইসলামনগরগামী রাস্তাটি দিয়ে পুরাতন কলাভবন, ব্যবসায় অনুষদসহ আটটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করেন।

দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, তিন রাস্তার মোড়ে ইট, প্ল্যাকার্ড, কাঠের ব্যানার ও চেয়ার দিয়ে অবরোধ করে রাখা হয়েছে। রিকশা, প্রাইভেট কারসহ বিভিন্ন যানবাহন ওই অবরোধের পাশের পুকুরের ধারে পার্কিং করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পায়ে হেঁটে বিভাগে যাচ্ছেন। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন এসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এর আগে গত সোমবার প্রাধ্যক্ষ সিকদার মো. জুলকারনাইনের পদত্যাগের দাবিতে উপাচার্য মো. নূরুল আলমের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা। তবে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান না পেয়ে ওই দিন রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্র–সংলগ্ন রাস্তাটি ইট দিয়ে অবরোধ করেন তাঁরা। এরপর গতকাল মঙ্গলবার সকালে কে বা কারা ইটগুলো সরিয়ে দেন।

বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ৫০তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘রোজার মাসে রোজা রেখে ক্লাস করতে যাই। এতেই কষ্ট হয়। তার ওপর রাস্তা অবরোধের কারণে রিকশা বিভাগ পর্যন্ত যেতে পারছে না, আমাদের পায়ে হেঁটে যেতে হচ্ছে। দ্রুত এই সমস্যা সমাধান করার দাবি জানাচ্ছি।’

আল-বেরুনী হলের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলের প্রাধ্যক্ষ নিয়মিত হলে আসেন না, ফলে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিতে প্রাধ্যক্ষের বাসায় ও বিভাগে যেতে হয়। তাঁর দায়িত্বে অবহেলার কারণে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এ ছাড়া দীর্ঘদিন হলের ক্যানটিন বন্ধ থাকলেও তিনি সেটি চালু করার বিষয়ে উদ্যোগ নেননি। এতে প্রায় দুই মাস পার্শ্ববর্তী ইসলামনগর বাজার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় গিয়ে খাবার খেতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ওই হলের প্রাধ্যক্ষ মো. সিকদার জুলকারনাইন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী আমি হলে যারা অছাত্র আছে, তাদের বের করার জন্য চেষ্টা করেছি, এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ নিয়ে আসা হয়েছে, সেগুলো স্রেফ একদল অছাত্রের ইন্ধনে করানো অভিযোগ। তারা বৈধ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে এসব মিথ্যা, ভিত্তিহীন অভিযোগ নিয়ে এসেছে। এটা আমার জন্য, একজন অধ্যাপক হিসেবে মানহানিকর। হলের ক্যানটিন সমস্যা সমাধান করে দিয়েছি। আমি ২৪ ঘণ্টা ক্যাম্পাসে থাকি, হলে প্রতিটা দিন যাই। কাজেই এসব মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে অছাত্র বের করার যে অভিযান চলমান, সেটা বন্ধ করা যাবে না। সেটার জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করছি। এসব অবৈধ শিক্ষার্থী যত দিন হলে থাকবে, তত দিন শুধু হল নয়, ক্যাম্পাসের পরিস্থিতিই ঠিক থাকবে না। বিষয়গুলো প্রশাসনকে জানিয়েছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও আল-বেরুনী হলের ওয়ার্ডেন মহিবুর রৌফ বলেন, ‘সকালে আমরা আল-বেরুনী হলের শিক্ষার্থীরা যেখানে অবরোধ করেছে, সেখানে গিয়েছিলাম। তবে শিক্ষার্থীরা আমাদের অনুরোধ রাখেনি। তারা আমার সঙ্গে খুবই খারাপ ব্যবহার করেছে।’

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. নূরুল আলমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।