সাড়ে ৫ মাস পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি

ভারতীয় পেঁয়াজফাইল ছবি

সাড়ে পাঁচ মাস পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। আজ রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পাঁচটি ট্রাকে ১৪৯ মেট্রিক টন ভারতীয় পেঁয়াজ বাংলাদেশে ঢুকেছে বলে স্থানীয় আমদানিকারকেরা জানিয়েছেন।

এদিকে সাড়ে চার মাস পর সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়েও ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। এদিন দুটি ট্রাকে ৫০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করেছে একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।

হিলি স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে আজ বেলা দুইটা পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানির জন্য সাতটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ২৩০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো মেসার্স সততা বাণিজ্যালয়, মেসার্স নাশাত ট্রের্ডাস, এমএসআল মক্কা ইমপ্রেস, মেসার্স জগদীশ চন্দ্র রায়, ক্রাউন ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল, আনাস গ্রুপ প্রাইভেট লিমিটেড ও রাধে-শ্যাম অ্যান্ড সন্স। রাধে-শ্যাম অ্যান্ড সন্স ৫০ মেট্রিক টন ও অন্য ছয়টি প্রতিষ্ঠান ৩০ মেট্রিক টন করে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পেয়েছে।

হিলি স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক আনোয়ার হোসেন বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আর কোনো আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে অনুমতি দিলে সেটা পরে জানা যাবে।

হিলি স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, গত ২ মার্চ হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে একটি ট্রাকে ২৯ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছিল। এরপর দেশি পেঁয়াজের দাম কম ও ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা কমে যাওয়ায় আমদানিকারকেরা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেননি। সম্প্রতি দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানিকারকেরা পেঁয়াজ আমদানির জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন।

হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স সততা বাণিজ্যালয়ের স্বত্বাধিকারী বাবলুর রহমান দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৩০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পেয়েছি। আজ বিকেলে একটি ট্রাকে এসব পেঁয়াজ বাংলাদেশে আসবে। প্রতি কেজি পেঁয়াজ পাইকারি কত দামে বিক্রি হবে, সেটি বন্দরের শুল্ক স্টেশন থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের শুল্কায়নের পর লাভ রেখে নির্ধারণ করা হবে।’

বিরামপুরের কাটলাবাজারের সবজি ব্যবসায়ী এস্তামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, আজ বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। শুনেছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হবে। ভারতের পেঁয়াজ বাংলাদেশে ঢুকলে খুচরা বাজারেও দাম কমতে শুরু করবে। তখন আগের দামে কেনা পেঁয়াজ লোকসানে বিক্রি করতে হবে।

ভোমরা বন্দর দিয়ে ঢুকল ৫০ মেট্রিক টন

এদিকে সাড়ে চার মাস পর আজ সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। বিকেলে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ‘অয়ন ট্রেডার্স’ দুটি ট্রাকে ৫০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করে।

সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে আজ বিকেলে দুটি ট্রাকে ৫০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়
ছবি: সংগৃহীত

ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা বলেন, দেশের পেঁয়াজ চাষিরা যাতে ভালো দাম পান, সে জন্য ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি অলিখিতভাবে বন্ধ ছিল। তারপর চার মাস ২০ দিন পর আজ পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। আরও ১৪ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানির অপেক্ষায় ভারতের ঘোজাডাঙা বন্দরে অপেক্ষা করছে।

ভোমরা স্থলবন্দরের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. শওকত হোসেন জানান, চলতি বছরের ২৭ মার্চ এ বন্দর দিয়ে সর্বশেষ পেঁয়াজ আমদানি হয়। আজ বিকেলে ৫০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এর মাধ্যমে আবার পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলো।