হলের ডাইনিংয়ে ৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা বকেয়ার অভিযোগ পরিচালকের

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নিবীণা হলের ডাইনিং পরিচালক তারা মিয়া
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নিবীণা হলের ডাইনিং চালাতে গিয়ে ৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা বকেয়া পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ডাইনিংয়ের পরিচালক তারা মিয়া। বকেয়া টাকা ওঠানোর সুযোগ না দিয়ে উল্টো তাঁকে ডাইনিং পরিচালনার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছেন ছাত্রলীগের এক নেতা। এতে নিজের পরিবার নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন তিনি।

তারা মিয়ার অভিযোগ, বাকিতে খাওয়ার তালিকায় যাঁরা আছেন, তাঁদের বেশির ভাগই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। নেতাদের নাম বলে দীর্ঘদিন ধরে বাকিতে খেয়ে আসছিলেন। গত বৃহস্পতিবার তিনি অগ্নিবীণা হলের ডাইনিং পরিচালনার দায়িত্ব ছেড়ে আসেন। এর আগে তাঁর বকেয়া টাকার বিষয়ে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসানকে জানান। তবে কেউ এ ব্যাপারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেননি।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের নেতা রাকিবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘তারা মিয়ার অভিযোগ বানোয়াট। গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি আমাদের জানিয়েছেন, তাঁর দুই লাখ টাকা বকেয়া। হঠাৎ করেই এক মাসের মধ্যে কীভাবে সেটি ১০ লাখ টাকা হয়ে যায়? আর আমার নাম বলে বা ছাত্রলীগের পরিচয় দিয়ে কেউ কোনো দিন বাকিতে খায়নি। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ।’

তারা মিয়া দাবি করেন, ২০২০ সালের শুরুর দিকে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর কিছুদিন আগে তিন বছরের চুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নিবীণা হলের ডাইনিংয়ের খাবার পরিচালনার দায়িত্ব নেন তিনি। এটি তিনি ছাত্রলীগের নেতাদের মাধ্যমে নিয়েছেন। এ জন্য ছাত্রলীগের নেতাদের মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েছেন। ডাইনিংয়ে তিনি মূলত খাবার বিক্রি করেন করোনার প্রকোপ শেষে বছর দেড়েক আগে থেকে। এর মধ্যে আশপাশের অন্যান্য হলের ডাইনিং ও মেস বন্ধ থাকায় তাঁর ডাইনিংয়ে প্রতিদিন দেড় হাজারের বেশি শিক্ষার্থী খেতেন। এদের মধ্যে ১৫০ থেকে ২০০ জন খেয়ে টাকা পরিশোধ করতেন না। বছর শেষে এই বকেয়া জমে জমে প্রায় ১০ লাখ টাকা হয়েছে বলে দাবি তারা মিয়ার। এ ক্ষেত্রে তিনি ২ লাখ ৩৭ হাজার টাকার তালিকা দেখাতে পেরেছেন। বাকি তালিকা তাঁর ছেলের কাছে আছে বলে দাবি করেন।

তাঁরা মিয়া বলেন, সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের মুখে মুখে তিনি জানতে পারেন তাঁর হলের খাবার পরিচালনার সময়কাল শেষ হয়ে আসছে। বিষয়টি জানতে পারার পর তিনি নিজের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য হলের প্রশাসনকে অনুরোধ করেন। এর কয়েক দিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান ডেকে নিয়ে তারা মিয়াকে দ্রুত সময়ের মধ্যে হলের খাবার পরিচালনা থেকে সরে যেতে বলেন।

অগ্নিবীণা হলের প্রাধ্যক্ষ কল্যাণাংশু নাহা বলেন, ‘বকেয়া দেওয়ার বিষয়টি একেবারে তারা মিয়ার ব্যক্তিগত দায়িত্ব। এটি ভোক্তাদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে। তারপরও বকেয়ার বিষয়টি জানার পর আমি মানবিক আবেদন হিসেবে সব শিক্ষার্থীকে জানিয়েছি যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে তারা মিয়ার বকেয়া পরিশোধ করে দেন।’