দুর্গোৎসবের শুভেচ্ছায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের আগাম প্রচারণা

কাউন্সিলর পদের প্রচারণায় আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অনুসারীরা এমন প্রচারণা চালাচ্ছেন।

সিলেট নগরে দুর্গোৎসবের শুভেচ্ছায় সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ফেস্টুন সাঁটানোর এ ছবিটি নগরের লামাবাজার এলাকা থেকে তোলা। গতকাল বিকেলে
ছবি: প্রথম আলো

শারদীয় দুর্গাপূজা সামনে রেখে সরব হয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তাঁরা ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণ বানিয়ে শারদীয় শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি সশরীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপে গিয়ে পুণ্যার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুর্গাপূজা শুরুর পর কয়েক দিনে নগরের হিন্দুধর্মাবলম্বী–অধ্যুষিত এলাকায় শতাধিক প্রার্থীর তৎপরতা দেখা গেছে। এর মধ্যে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী আছেন আটজন। পূজামণ্ডপে আসা একাধিক পুণ্যার্থীর ভাষ্য, অনেক প্রার্থী মণ্ডপ পরিদর্শনে এসে নিজেদের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। অনেকে আগামী সিটি নির্বাচনের জন্য দোয়া ও আশীর্বাদ কামনা করছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের কালীবাড়ি, করেরপাড়া, দাড়িয়াপাড়া, জল্লারপাড়, জামতলা, মাছুদিঘির পাড়, বালুচর, টিলাগড়, মেজর টিলাসহ হিন্দুধর্মাবলম্বী-অধ্যুষিত অর্ধশতাধিক এলাকায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের শুভেচ্ছাসংবলিত অসংখ্য ব্যানার ও ফেস্টুন সাঁটানো। অনেকে তোরণ বানিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। অসংখ্য কাউন্সিলর প্রার্থী প্রচারণায় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জানান দিয়েছেন। এর বাইরে অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শারদীয় শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

২০০২ সালে সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার পর সিলেটে এখন পর্যন্ত চারবার নির্বাচন হয়েছে। আগামী বছরের জুনে পঞ্চমবারের মতো নির্বাচন হওয়ার কথা। সম্ভাব্য প্রার্থীরা দুর্গাপূজা সামনে রেখে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের মাধ্যমে মূলত আগাম নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন।

পূজা সামনে রেখে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য যেসব মেয়র প্রার্থীর তৎপরতা দেখা গেছে, তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক এ টি এম এ হাসান জেবুল ও আজাদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান আহমদ এবং সদস্য প্রিন্স সদরুজ্জামান চৌধুরী উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর শারদীয় শুভেচ্ছাসংবলিত অসংখ্য তোরণ দেখা গেছে নগরে।

সম্ভাব্য কয়েকজন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী বলছেন, আসন্ন সিটি নির্বাচনের আগে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের এটাই বড় ধর্মীয় উৎসব। তাই গুরুত্বপূর্ণ উৎসব সামনে রেখে প্রার্থীরা ভোটারদের আকর্ষণ করতে ব্যানার ও ফেস্টুন সাঁটানোর পাশাপাশি তোরণ বানিয়েছেন। পাশাপাশি সশরীর মণ্ডপে গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। বিশেষ করে কাউন্সিলর পদের প্রচারণায় আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অনুসারীরা এমন প্রচারণা চালাচ্ছেন।

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ সিলেট মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, চলতি বছর মহানগরে ১৫৫টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হচ্ছে। যেহেতু ৮–৯ মাস পরে সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা, তাই সম্ভাব্য প্রার্থীরা দুর্গাপূজাকে প্রচারণার মাধ্যম হিসেবে কাজে লাগাচ্ছেন। প্রতিটি মণ্ডপে সম্ভাব্য প্রার্থীরা কমবেশি যাচ্ছেন এবং পুণ্যার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন। বিশেষ করে অনেক কাউন্সিলর প্রার্থী সরাসরি আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কথা বলছেন।