মোরেলগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের সব কার্যক্রম স্থগিতের সিদ্ধান্ত

আওয়ামী লীগ

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। আজ শনিবার বাগেরহাট শহরের রেল রোডে অবস্থিত দলীয় কার্যালয়ে জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় মোরেলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং এর আওতাধীন ১৬টি ইউনিয়নে সদ্য গঠিত আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির কার্যক্রম স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সংগঠনের নীতিমালা অনুযায়ী কাজ না করা এবং জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশনা অমান্য করায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দলীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এমদাদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কোনো লিখিত নির্দেশনা পাইনি। কেউ আমাদের জানায়নি। তবে লোকমুখে শুনেছি। রেজল্যুশনের কপি পেলে বা আমাদের চিঠি দেওয়া হলে আমরা সাংগঠনিকভাবে বিষয়টির সমাধান করার চেষ্টা করব।’

বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরুজ্জামান (টুকু) বলেন, সংগঠনের আলোকে কাজ না করা এবং জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশ অমান্য করায় মোরেলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, মোরেলগঞ্জ উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন এবং এসব ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন নিয়ে দলীয় নেতা–কর্মীদের মধ্যে মতবিরোধ চলছিল। ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটিতে দলীয় পদ পাওয়া নিয়ে নিজেরা লিপ্ত হচ্ছিলেন সংঘর্ষে।

বিএনপি-জামায়াত অনুসারীদের নিয়ে বিভিন্ন ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠনেরও অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগে হোগলাবুনিয়া ও মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নে মারামারি, ভাঙচুর, পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়েছেন ১৫-২০ জন নেতা–কর্মী। কয়েকটি ইউনিয়নে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছেন চেয়ারম্যানরা।

এদিকে মোরেলগঞ্জের বহরবুনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটিতে একাধিক মৃত ব্যক্তির নাম অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন স্থানে পকেট কমিটি করাসহ নানা অভিযোগে বিভিন্ন ইউনিয়নের একাধিক নেতা–কর্মী জেলা আওয়ামী লীগের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা আওয়ামী লীগ জরুরি সভা আহ্বান করে। আজ অনুষ্ঠিত ওই সভা থেকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।

মোরেলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য আমিরুল আলম (মিলন) এবং সাধারণ সম্পাদক এম এমদাদুল হক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আওয়ামী লীগের এক সদস্য বলেন, মোরেলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেক সদস্য দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। কমিটি গঠনের সময় তাঁদের যত দ্রুত সম্ভব সহযোগী সংগঠন থেকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল। তাঁরা তা করেননি। এ ছাড়া উপজেলার ১৬ ইউনিয়নে কমিটি করার সময় জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করার কথা ছিল। উপজেলা আওয়ামী লীগ তা না করে নিজেদের মতো করে কমিটি করেছে। এসব কারণে দলের স্থানীয় নেতা–কর্মীরা জেলা কমিটির কাছে অভিযোগ করেন। এসব বিষয় নিয়ে আজ জেলা আওয়ামী লীগের জরুরি সভা হয়। সেখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটির কার্যক্রম ও ইউনিয়ন কমিটি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আজকের সভার সিদ্ধান্ত শিগগিরই লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট ইউনিটে জানানো হবে। তা ছাড়া কমিটি গঠন নিয়ে অনিয়মের বিষয়ে কেন্দ্রে জানানো হবে। সেখানে উপযুক্ত ব্যাখ্যা ও প্রতিকার চাওয়া হবে।