‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ ও তাঁর স্ত্রীকে গ্রেপ্তার দেখানো হলো আরও এক খুনের মামলায়

‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেনছবি: তাঁর ফেসবুক আইডি থেকে

চট্টগ্রামের ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ ও তাঁর স্ত্রী শারমিন তামান্নাকে আরও একটি খুনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রোববার বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সিদ্দিক শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

বিষয়টি প্রথম আলোকে আজ নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সরকারি কৌঁসুলি রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নগরের বাকলিয়া এলাকার একটি মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র নিজাম উদ্দিন গত বছরের ৫ আগস্ট নগরের নিউমার্কেট এলাকায় গুলিতে নিহত হন। এ ঘটনায় তাঁর বাবা সাহাব উদ্দিন মামলা করেছেন। সেই মামলার তদন্তে পুলিশ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ ও তাঁর স্ত্রী জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছেন। পরে তাঁদের এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত তা মঞ্জুর করেন।

সরকারি কৌঁসুলি আরও বলেন, সাজ্জাদ রাজশাহী কারাগারে আর তামান্না রয়েছেন ফেনী কারাগারে। তাঁদের চট্টগ্রাম আদালতে নিরাপত্তার কারণে হাজির করা হয়নি। ভার্চ্যুয়ালি শুনানি শেষে আদালত খুনের মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার দেখান।

আদালত সূত্র জানায়, সাজ্জাদ ও তাঁর স্ত্রীর খুনের সাত মামলায় জামিন পান গত বছরের সেপ্টেম্বরে। গত সপ্তাহে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে জামিননামা আসার পর বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ জামিন স্থগিতের জন্য আবেদন করেন। জামিন হওয়া সাতটি খুনের মামলার মধ্যে চারটি নগরের চান্দগাঁও থানায় ও তিনটি পাঁচলাইশ থানায় হয়েছিল। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে খুনের অভিযোগ ও বিস্ফোরক আইনে এসব মামলা করা হয়। পরে উচ্চ আদালত ওই সাতটি মামলায় জামিন স্থগিত করেন।

পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, সাজ্জাদ ১০টি হত্যাসহ মোট ১৯ মামলার আসামি। তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধেও একাধিক হত্যাসহ আটটি মামলা রয়েছে। গত ১৫ মার্চ ঢাকার একটি শপিং মল থেকে সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছুড়ে’ সাজ্জাদকে জামিনে মুক্ত করার কথা উল্লেখ করে তামান্নার একটি বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তাঁকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এদিকে সাজ্জাদ কারাগারে থাকলেও তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনীর তৎপরতা থেমে নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ। বাহিনীর অন্তত অর্ধশত সদস্য খুন, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। সাজ্জাদের অনুপস্থিতিতে মোহাম্মদ রায়হান, মোবারক হোসেন, বোরহান উদ্দিন ও নাজিম বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে পুলিশের ভাষ্য।

গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর গণসংযোগ চলাকালে একটি গলিতে গুলির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনাস্থলে নিহত হন সরোয়ার হোসেন বাবলা নামের এক সন্ত্রাসী। তাঁর বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সরোয়ারকে গুলি করা হয়। তবে ভিড়ের মধ্যে গুলি চালানো ব্যক্তিকে (শুটার) এখনো শনাক্ত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।