জাপা থেকে বহিষ্কৃত জিয়াউল মৃধার পক্ষে থাকার ঘোষণা আ.লীগের

জিয়াউল হক মৃধাছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা ও ৯টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটির নেতারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত নেতা সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধার পক্ষে কাজ করবেন।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের বগইর এলাকায় একটি হোটেলে সভা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটির সভাপতি নাজমুল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ঠাকুর এবং ৯টি ইউনিয়নের ১৭ জন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।

নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিকেল চারটায় সভা শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত। গোপনে সভা শেষ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যৌথভাবে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। সাইফুল ইসলাম ঠাকুর এবং একাধিক ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি–সম্পাদক প্রথম আলোকে বিষয়টি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সাবেক মৃধার (জিয়াউল হক মৃধা) পক্ষে কাজ করার জন্য।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া–২ আসনটি সরাইল উপজেলার ৯টি এবং আশুগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১০ হাজার ৭২ জন।

আরও পড়ুন

জিয়াউল হক মৃধা এ আসন থেকে নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এ আসনে দলীয় প্রার্থী না দিয়ে মহাজোটের প্রধান শরিক জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়। নির্বাচনে রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়াকে দেওয়া হয়েছিল লাঙ্গল প্রতীক। সদর উপজেলা কোড্ডা গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া জিয়াউল হক মৃধার জামাতা। তবে সুবিধা করতে না পেরে নির্বাচনের দুই দিন আগে রেজাউল নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। জিয়াউল হক মৃধা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বিএনপির প্রার্থী উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার কাছে পরাজিত হন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জাপার প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ ও চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয় । জিয়াউল হক মৃধা রওশনপন্থী হিসেবে পরিচিত। তিনি জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে মামলা করে দল থেকে বহিষ্কৃত হন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছিলেন সদ্য নির্বাচিত সংসদ সদস্য শাহজাহান আলম। পরে জোটকে ছেড়ে দিতে আওয়ামী লীগ শাহজাহান আলমকে প্রত্যাহার করে নেয়। এবার মহাজোটের প্রার্থী হয়েছেন জাতীয় পার্টির রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া। তাঁকে মেনে নিচ্ছে না স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং জাপার একটি অংশ।

আরও পড়ুন

রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ আমাকে কোনো সহযোগিতা করছে না। তাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগলের পক্ষে কাজ করছেন। আমার দলের নেতাদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করবো।’

এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মঈন উদ্দিন। তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন।

আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা মঈন উদ্দিনের পক্ষে কাজ করছি।’

এখানে মোট সাতজন প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। অন্য প্রার্থীরা হলেন, সাবেক সংসদ সদস্য মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ছেলে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী (মিনার), বিএনপির দলছুট সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া ছেলে তৃণমূল বিএনপির মাইনুল হাসান (সোনালী আঁশ), ন্যাশনাল পিপস পার্টির রাজ্জাক হোসেন (আম) এবং বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের ছৈয়দ জাফরুল কুদ্দুছ (ফুলের মালা)।