মাদক নিয়ে বিরোধে তরুণকে কুপিয়ে হত্যা, এলএসডি উদ্ধার

কুষ্টিয়ায় সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর বিজিবির অভিযানে মাদকসহ এক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছেছবি: বিজিবির সৌজন্যে

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে মাদক নিয়ে বিরোধের জেরে এক তরুণকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ সময় প্রায় ৯ কোটি টাকার এলএসডি ও ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি।

গতকাল শুক্রবার রাত আটটার দিকে উপজেলার জামালপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মোহন আলী মন্ডল (২৪) ওই গ্রামের মৃত মদন আলী মন্ডলের ছেলে। মোহনের পরিবার জানিয়েছে, তিনি কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

আজ শনিবার দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবি জানায়, গতকাল রাত আটটার দিকে মোহন ও হৃদয় নামের দুজন তরুণ রামকৃষ্ণপুর থেকে মোটরসাইকেলে জামালপুর যাচ্ছিলেন। আশ্রয়ণ বিওপি এলাকায় সীমান্ত পিলার থেকে ৫০০ গজ বাংলাদেশের ভেতরে বাবলাতলায় তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় কয়েকজন সন্ত্রাসী। দেশি অস্ত্র দিয়ে তাঁদের ঘাড় ও মাথায় আঘাত করা হয়। খবর পেয়ে বিজিবির টহল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে দুজনকে উদ্ধার করে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। মোহনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে সেখান থেকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে রাত সাড়ে ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

বিজিবি জানায়, ঘটনার পর টানা অভিযান চালিয়ে রাত তিনটার দিকে আশ্রয়ণ বিওপি এলাকার সীমান্ত পিলার থেকে আনুমানিক ৫০ গজ বাংলাদেশের ভেতরে ঠোটারপাড়া নামক স্থান থেকে মো. সোহেল (২৮) নামের একজনকে আটক করা হয়। তিনি ওই গ্রামের মিল্টনের ছেলে। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ৭৫ বোতল ফেনসিডিল ও ১৭ বোতল ভারতীয় এলএসডি উদ্ধার করা হয়। সোহেলকে ভুক্তভোগী হৃদয় শনাক্ত করেছেন বলে জানিয়েছে বিজিবি। উদ্ধার মাদকের দাম প্রায় ৮ কোটি ৮৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গের সামনে কথা হয় নিহত মোহনের মামা মো. বকুল হোসেনের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিকেলে মোহনকে বাড়ি থেকে ফোন করে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাঁকে ফোন দিলে কেউ ধরেনি। জানতে পেরে রাত আটটার দিকে আমি ফোন করলে বিজিবির এক সদস্য মোহনের ফোন ধরেন। বলেন মোহন গুরুতর জখম হয়েছে। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে বিজিবির সহায়তায় দৌলতপুর হাসপাতালে নেওয়া হয়।’ তিনি আরও বলেন, তাঁর ভাগনের সঙ্গে কারও বিরোধ ছিল কি না, জানা নেই। তিনি কৃষিকাজ করতেন। ভাগনের পিঠের নিচে গুলির চিহ্ন দেখেছেন বলেও তিনি দাবি করেন। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করবেন বলে জানান।

কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের মুখপাত্র, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপস) ফয়সাল মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, মাদক কেনাবেচা নিয়ে দুই পক্ষের মারামারিতে একজন নিহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় একজন আটক আছেন। ডিবি পুলিশসহ থানা-পুলিশ তদন্তে নেমেছে। গুলির বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।