ভাঙা সেতু সংস্কার হয়নি

গত বছরের ভয়াবহ বন্যায় এই সড়কের খলশাজুড়ি এলাকায় একটি সেতু ও রাস্তার কিছু অংশ ভেঙে যায়।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বালিয়াঘাট খলশাজুড়ির এই সেতুটি সংস্কার না হওয়ায় মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেনছবি: প্রথম আলো

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামে মানুষ এলাকার বালিয়াঘাট ও কাউকান্দি বাজার হয়ে উপজেলা সদর ও এলাকার সবচেয়ে বড় হাট বাদাঘাট বাজারে যাতায়াত করেন। কিন্তু গত বছরের ভয়াবহ বন্যায় এই সড়কের খলশাজুড়ি এলাকায় একটি সেতু ও রাস্তার কিছু অংশ ভেঙে যায়। এই সেতু ও সড়ক এখনো সংস্কার না হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন মানুষজন।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের মানুষজন তাহিরপুর উপজেলা সদর ও বাদাঘাট বাজারে যেতে হলে বালিয়াঘাট নতুনবাজার ও কাউকান্দি বাজার হয়ে যেতে হয়। এটিই তাঁদের মূল সড়ক। ২০২২ সালের জুন মাসের বড় বন্যায় সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একই সঙ্গে সড়কের খলশাজুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে একটি সেতু ভেঙে যায়। এরপর ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াতের ক্ষেত্রে মানুষের ভোগান্তি শুরু হয়। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন সেতুর ভাঙা অংশে বাঁশ ও ছাটাই দিয়ে হাঁটার বা মোটরসাইকেল চলার ব্যবস্থা করেন। এখন ছাটাইও নড়বড়ে হয়ে গেছে। যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ এই জায়গা পার হতে গিয়ে বয়স্ক মানুষের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা বেকায়দায় পড়েন। অথচ দেড় বছরেও সেতু, সড়ক সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। শুধু সেতু নয়, গত বন্যায় সড়কের হাওরের ঢেউয়ে সড়কের দুই পাশের অনেক স্থানের মাটি সরে যায়। সড়কজুড়েই সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দের।

কাউকান্দি উচ্চবিদ্যালয়, মাদ্রাসা, খলশাজুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোলকপুর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষাথীরা এই সড়ক দিয়ে যাতাযাত করে। কাউকান্দি এলাকারা বাসিন্দা শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান জানায়, সড়ক ও সেতু দুটোই সংস্কার হওয়া জরুরি। সেতু ভাঙার কারণে এখানে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। ছোট ছোট শিশুরা এখানে গিয়ে সমস্যায় পড়ে।

স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আমিন জানান, সড়ক ও সেতু সংস্কারের জন্য বহুবার এলাকার জনপ্রতিনিধিদের বলা হয়েছে। গত বছর হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের নাম করে সড়কে কিছু মাটি দেওয়া হয়েছিল। বর্ষায় পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে সেই মাটি আবার ধসে গেছে। এলাকার লোকজন কোনো উপায় না পেয়ে নিজেরাই সেতুর ওপর বাঁশ ও ছাটাই দিয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছেন।

কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, প্রতিদিন এই ভাঙা সড়ক এবং ভাঙা সেতু দিয়ে আমাদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়। এবার বৃষ্টি শুরুর হওয়ার আগেই যাতে সড়ক ও সেতু সংস্কার করা হয়। এলাকায় ভাড়াচালিত একটি মোটরসাইকেলের চালক গফুর মিয়া বলেন, ‘এখানে পর্যটকদের নিয়ে আমরা মোটরসাইকেল চালাই। এই ভাঙা সড়কে গাড়ি চালাতে মন চায় না। নিরুপায় হয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। ভাঙাচুরা সড়ক এবং সেতু দিয়ে গাড়ি চালাতে গিয়ে এখানে দুর্ঘটনা ঘটছে।’

এলজিইডি সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ সড়ক, সেতু ও কালভার্ট সংস্কারের জন্য একটি বিশেষ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।