মেহেরপুরে দুই ভাই হত্যা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড
মেহেরপুরে রফিকুল ইসলাম ও আবু জেল নামের দুই হত্যা মামলায় ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—গাংনী উপজেলার কাজীপুর গ্রামের হালিম মিয়া (৩৫), আতিয়ার আলী (৪০), শরিফুল ইসলাম (৪০), শরিফ উদ্দিন (৪০), ফরিদ খা (৪৫), জালাল উদ্দীন (৪৩), আজিজুল হক (৩৬), মনিরুল মিয়া (২৫) ও দবির উদ্দীন (৩২)। এর মধ্যে জালাল উদ্দীন পলাতক। বাকি সবাই রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। একই মামলায় অভিযোগ প্রামাণিত না হওয়ায় পাঁচ আসামিকে বেকুসর খালাস দিয়েছেন আদালত।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের ৫ জুন গাংনী উপজেলার কাজীপুর গ্রামের মাঠ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেনসিডিল উদ্ধার করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বিজিবির কাছে ফেনসিডিল ধরিয়ে দেওয়ার সন্দেহ ওঠে রফিকুল ইসলাম ও আবু জেলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে রফিকুল ইসলামকে ডেকে নিয়ে মারধর করেন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা। তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে রফিকুলকে উদ্ধার করেন। ১৫ জুন রাত ১০টার দিকে বিষয়টি মীমাংসার জন্য রফিকুল ইসলাম ও আবু জেলকে ডেকে নিয়ে যান আসামিরা। এর পর থেকে দুই ভাইয়ের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরের দিন ভোরে কাজীপুর গ্রামের ভারতীয় সীমান্ত এলাকা থেকে দুই ভাইয়ের ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় নিহত রফিকুল ও আবু জেলের বোন জরিনা বেগম বাদী হয়ে গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত করেন গাংনী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান। ২০১২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ১৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তিনি। মামলার তিনজন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ১৭ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত ৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড দেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি কাজী শহীদুল হক ও আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন কামরুল ইসলাম, এ কে এম শফিকুল আলম ও আতাউল গণি। এ কে এম শফিকুল আলম বলেন, ‘এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। ন্যায়বিচারের জন্য উচ্চতর আদালতে আপিল করব।’
মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী শহীদুল হক বলেন, এটি একটি দৃষ্টান্তমূলক রায়। এ রায় নজির হয়ে থাকবে।