নারায়ণগঞ্জে এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে

বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো সাবেক প্রধান বিচারপতি হিসেবে এ বি এম খায়রুল হককে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করা হয়। ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে তাঁকে হাজতখানায় নেওয়া হয়
ছবি: প্রথম আলো

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে বেআইনি রায় প্রদান ও জাল রায় তৈরির অভিযোগে নারায়ণগঞ্জে একটি মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঈন উদ্দিন কাদিরের আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের ভিত্তিতে শুনানি শেষে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।

আরও পড়ুন

খায়রুল হক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ভার্চ্যুয়ালি শুনানিতে অংশ নেন। শুনানিতে মামলার বাদী জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল বারী ভূঁইয়াসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী অংশ নেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ কাইউম খান প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সাবেক প্রধান বিচারপতি শুনানিতে অংশ নেন। আদালত শুনানি শেষে তাঁকে ফতুল্লা মডেল থানার মামলায় গ্রেপ্তারের আদেশ দেন।

গত বছরের ২৫ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মো. আব্দুল বারী ভূঁইয়া বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলাটি করেন। ওই মামলায় বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে একমাত্র আসামি করা হয়।

মামলায় বাদী সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে বেআইনি ও জালজালিয়াতি করে রায় প্রদান ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনেন।

মামলার বাদী মো. আব্দুল বারী ভূঁইয়া প্রথম আলোকে জানান, এ বি এম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে জালজালিয়াতি করে রায় দেওয়া ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত। তিনি বলেন, বিচারকের সর্বোচ্চ আসনে বসে এ বি এম খায়রুল হক দেশকে ধ্বংস করার জন্য ওই রায় দিয়েছিলেন। তাঁর শাস্তির মাধ্যমে দেশবাসী যাতে ন্যায়বিচার পায় এবং ভবিষ্যতে বিচারকের আসনে বসে আর কোনো বিচারক অবিচার করতে না পারেন, সে জন্য যাতে দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়, এ কারণে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ ছাড়া গত বছরের ২৬ আগস্ট এ বি এম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিলেন নজরুল ইসলাম মোল্লা নামের এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তাঁকে জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে যুবদল কর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে শুনানি শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।