ঝিনাইদহে শিশুকে চড়, বড়দের সংঘর্ষে প্রাণ গেল একজনের

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষে নিহত আক্তার হোসেনের স্বজনদের আহাজারিছবি: প্রথম আলো

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ভাঙাড়ির দোকান থেকে এক শিশুর খালি বোতল নেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আক্তার হোসেন নামের এক ভ্যানচালক নিহত হয়েছেন। এ সময় উভয় পক্ষের আরও অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে সজীব হোসেন নামের একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ইফতারের পর এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নিহত আক্তার হোসেন কালীগঞ্জ উপজেলার বারোপাখিয়া গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে। কালীগঞ্জ পৌরসভার নদীপাড়া এলাকার ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, গতকাল বিকেলে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে খেলা করছিল নিহত আক্তার হোসেনের আট বছর বয়সী ভাতিজি ফারজানা আক্তার। পাশেই ছিল ওই এলাকার বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেনের ভাঙাড়ির দোকান। শিশুটি ওই দোকানের সামনে থেকে একটি খালি বোতল কুড়িয়ে নেয়। সে দোকানে বসে অন্যান্য মালামাল নিয়ে খেলা করছিল। এ সময় দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সজীব হোসেন হাত থেকে বোতল কেড়ে নেন এবং চড় দিয়ে দোকান থেকে তাড়িয়ে দেন। শিশুটি বাড়ি ফিরে ঘটনা বলার পর চাচা আক্তার হোসেন ও প্রতিবেশী শিপন হোসেন বিষয়টি শুনতে এসে সজীব হোসেনের ওপর চড়াও হন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে আহত হন দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সজীব হোসেন, আক্তার হোসেন ও শিপন হোসেন।

আক্তারের বড় ভাই নওশের আলীর অভিযোগ, লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে তাঁদের দুজনকে ফেলে রাখেন প্রতিপক্ষের লোকজন।

এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান পৌর আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক রাসেল হোসেনসহ অন্যরা। এ সময় উভয়ের মধ্যে আরেক দফা সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে যুবলীগ নেতা রাসেল হোসেনসহ আরও পাঁচজন আহত হন।

রাসেল হোসেন বলেন, তিনি বিষয়টির সমাধানের জন্য গিয়েছিলেন। কিন্তু দেলোয়ারের এক ছেলে পাশের ছাদ থেকে ইট ফেলে তাঁর মাথায় আঘাত করেছে। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আক্তার হোসেন ও সজীব হোসেনকে ঢাকায় নেওয়া হয়। সেখানে রাত দুইটার দিকে আক্তার হোসেন মারা যান। যুবলীগ নেতা রাসেল হোসেনসহ অন্যরা স্থানীয় কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

নিহত আক্তার হোসেনের বড় ভাই নওশের আলী বলেন, তাঁর ভাই ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান। তিনি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন। তাঁর জুনায়েদ হোসেন (১০), জুবায়েদ হোসেন (৮) ও বায়েজিদ হোসেন (৫) নামে তিনটি ছেলে আছে। সন্ত্রাসীরা তাঁর ভাইকে পিটিয়ে মেরে ফেলল, এখন এই শিশু তিনটি নিয়ে স্ত্রী মর্জিনা বেগম কীভাবে চলবেন।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু আজিফ বলেন, রাতেই উভয় পক্ষ থানায় দুটি মামলা করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন মারা গেছেন। তাঁরা আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছেন। তবে এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেননি। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত আছে, পুলিশ টহল দিচ্ছে।