জামিন দিতে বিচারককে হত্যার হুমকি, আইনজীবীসহ তিনজন কারাগারে
ধর্ষণ মামলায় জামিন দিতে যশোরের একটি আদালতের বিচারককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এক আইনজীবীসহ তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জেলা ডিবি (গোয়েন্দা) পুলিশের একটি দল তাঁদের গ্রেপ্তার করে। এরপর বিকেলে তাঁদের আদালতে নেওয়া হলে আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন যশোর শহরের পুরোনো কসবা এলাকার বাসিন্দা আইনজীবী নব কুমার কুন্ডু (৫৫), তাঁর সহযোগী মোহরার পুরোনো কসবা কাজীপাড়ার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম (৪২) ও কম্পিউটার অপারেটর শহরের ষষ্টিতলা এলাকার বাসিন্দা মিহির কুমার সাহা।
যশোর ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুপন কুমার সরকার স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফারজানা ইয়াসমিন ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গত ২৮ জানুয়ারি তিনি ডাকযোগে একটি চিঠি পান। এতে বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির জনৈক নজরুল ইসলাম নামের একজনের স্বাক্ষর ছিল। চিঠিতে বলা হয়, ‘আপনাকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে, ৩০ জানুয়ারি ক্রিমিনাল মিস ২৯/২৪ নম্বর মামলায় ধর্ষণের অভিযোগ থাকলেও সকল আসামিকে জামিন দেবেন। অন্যথায় আপনার জীবন শেষ করে দেওয়া হবে এবং আপনার ওই অবস্থা করা হবে।’ বিচারক বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানালে ডিবি পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এরপর চিঠি পোস্ট করা যশোর পোস্ট অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ ও কাগজপত্র পর্যালোচনা করে বুধবার গভীর রাতে শহরের কাজীপাড়া এলাকা থেকে আইনজীবীর মোহরার রবিউল ইসলামকে আটক করা হয়।
পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, রবিউলের দেওয়া তথ্যানুযায়ী গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে শহরের সিভিল কোর্ট মোড় এলাকা থেকে কম্পিউটার অপারেটর মিহির সাহাকে আটক করা হয়। তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পরবর্তীকালে আইনজীবী নব কুমার কুন্ডুকে আটক করা হয়। তাঁরা বিচারককে চিঠিতে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তথ্য দিয়েছেন।
এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেছেন। আটক ব্যক্তিদের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু মোর্তজা বলেন, বিচারককে হুমকি দেওয়ার ঘটনা সত্য হলে আইনজীবী নব কুমার কুন্ডুর বিরুদ্ধে সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।