আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে বোনের মামলায় ভাইসহ আসামি ২, যুবক গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

টাঙ্গাইল শহরের বোয়ালী এলাকা থেকে ধর্ষণ মামলার বাদী এক কিশোরীর (১৭) ‘ঝুলন্ত’ লাশ পাওয়ার ঘটনায় এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার যুবকের নাম সৌরভ পাল। তিনি শহরের থানাপাড়া এলাকার শ্যামল পালের ছেলে। তিনি নিহত কিশোরীর বন্ধু ছিলেন।

গতকাল শনিবার বিকেলে নিজ কক্ষে বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই কিশোরীর লাশ পাওয়া যায়। পরে সিআইডির ক্রাইম সিন দল রাতে লাশটি উদ্ধার করে।

গতকাল রাতেই ওই কিশোরীর বড় বোন বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় গ্রেপ্তার সৌরভ পাল ছাড়া নিহত কিশোরীর সহোদর ভাইকেও আসামি করা হয়েছে। নিহত কিশোরী টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনির বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছিলেন। গোলাম কিবরিয়া জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব এবং টাঙ্গাইল-২ (গোপালুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনিরের ভাই।

আরও পড়ুন

টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ছালাম মিয়া জানান, গ্রেপ্তার সৌরভ পালকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে। কিশোরীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

পুলিশ ও কিশোরীর স্বজনেরা জানিয়েছেন, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ঘুমানোর কথা বলে ওই কিশোরী নিজের কক্ষের দরজা বন্ধ করে। কক্ষে ঢোকার আগে নিজের পাঁচ মাস বয়সী সন্তানকে ওই বাসায় অবস্থানরত এক আত্মীয়ের কাছে রেখে যায়। কিছুক্ষণ পর শিশুটি কান্নাকাটি শুরু করে। ওই আত্মীয় তখন দরজায় ধাক্কা দিয়ে কিশোরীকে ডাকাডাকি শুরু করেন। কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ পাননি। খবর পেয়ে বিকেল চারটার দিকে পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়।

চলতি বছরের ৫ এপ্রিল আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করে সদর থানায় একটি মামলা করে ওই কিশোরী। মামলার এজাহারে ধর্ষণের কারণে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। পরে ওই মামলায় গোলাম কিবরিয়া উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন। পরে নিম্ন আদালতে হাজির হলে আদালত গোলাম কিবরিয়াকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত ৩০ জুন টাঙ্গাইল শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ওই কিশোরী পুত্রসন্তানের জন্ম দেয়। পরে আদালতের নির্দেশে ওই কিশোরীর গর্ভে জন্ম নেওয়া শিশুর ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার প্রতিবেদনে জন্ম নেওয়া ওই শিশুর জৈবিক (বায়োলজিক্যাল) পিতা গোলাম কিবরিয়া নন বলে উল্লেখ করা হয়। পরে আদালত ৯ অক্টোবর গোলাম কিবরিয়াকে ১১ জুলাই উচ্চ আদালতের দেওয়া জামিন বহাল রাখেন। পরে তিনি কারামুক্তি লাভ করেন। ধর্ষণের মামলাটি টাঙ্গাইলের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিপিআই) তদন্ত করছে।