মানিকগঞ্জে কোরবানির পশু বাড়তি, গাজীপুরে ঘাটতি
এবার গোখাদ্যের দাম ছিল বেশি। ফলে পশুর দামও বেশি পড়বে। ভারতীয় গরু আমদানি না হলে লাভবান হওয়ার আশা দেখছেন খামারিরা।
ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র এক সপ্তাহ। এরই মধ্যে কোরবানির জন্য পশু ক্রয়-বিক্রয় শুরু হয়ে গেছে। ঢাকার পার্শ্ববর্তী গাজীপুরে চাহিদার অর্ধেকের বেশি কোরবানির পশুর ঘাটতি রয়েছে। ভিন্ন চিত্র মানিকগঞ্জে। জেলাটিতে কোরবানিতে জবাইযোগ্য পশু আছে চাহিদার চেয়ে বেশি। জেলা দুটির প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এবার গাজীপুরে কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৭৪২টি। কোরবানিযোগ্য পশু আছে ৮৫ হাজার ২৩৭টি। ঘাটতি রয়েছে ৯৩ হাজার ৫০৫টি পশু। চাহিদার বিপরীতে কোরবানির পশুর ঘাটতি সবচেয়ে বেশি জেলার সদর উপজেলায়। সদরে কোরবানিযোগ্য পশু আছে ৮ হাজার ৬৪৭টি, চাহিদা ৫০ হাজার। ঘাটতি ৪১ হাজার ৩৫৩টি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাজীপুরে এবার ৭ হাজার ১৫২টি খামারে কোরবানিযোগ্য পশু পালন করা হয়েছে। খামারিরা বলছেন, ভারতীয় পশু না এলে ভালো দাম পাবেন তাঁরা। গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সাহেবাবাদ এলাকার অয়ন অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক আকরাম হোসেন বলেন, মানুষ হাটের পাশাপাশি খামারেও ভিড় করছেন কোরবানির পশু কিনতে। এ বছর তিনি ৩০টি গরু ছোট থেকে লালন-পালন করে কোরবানিযোগ্য করে তুলেছেন। আশা করছেন খামার থেকেই সব গরু বিক্রি হয়ে যাবে।
গোখাদ্যের দাম বাড়ার কারণে এবার পশুর দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান গাজীপুরের হোতাপাড়া এলাকার হাজি অ্যাগ্রোর মালিক আশরাফুল ইসলাম। তাঁর ভাষ্য, গত বছরের তুলনায় এবার গরুর মাংসের দাম বেড়েছে। গোখাদ্যের দাম বাড়ায় কোরবানির পশুর দাম বাড়তে পারে। তা ছাড়া এবার বাজারে প্রায় সবই দেশি গরু। দুই বছরের একটি হৃষ্টপুষ্ট দেশি ষাঁড়ের ওজন হচ্ছে প্রায় চার মণ, যার দাম পড়ছে প্রায় এক লাখ টাকা। এর নিচে এবার কোরবানির গরু মিলছে না।
হাটে যাতে ভেজাল গরু না ওঠে, এ জন্য সব নজরদারি রাখা হবে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর জেলা অতিরিক্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা লিপি রানী বসাক।
এদিকে মানিকগঞ্জে এবার কোরবানির জন্য চাহিদার দ্বিগুণের বেশি গবাদিপশু রয়েছে। উদ্বৃত্ত এসব পশু জেলার স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য এলাকায় বিক্রি হবে বলে জেলার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও খামারিদের সূত্রে জানা গেছে।
খামারিদের চাওয়া, দেশের বাইরে থেকে কোরবানির পশু যেন আমদানি করা না হয়। তাঁদের দাবি, এবার গবাদিপশুর খাবারের দাম বেশি থাকায় পশু লালন-পালনের খরচ বেড়েছে। দেশের বাইরে থেকে কোরবানির পশু আমদানি হলে ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
সদর উপজেলার খামারি সোনা মিয়া (৬৩) বলেন, এবার গবাদিপশুর খাদ্যের দাম গত বছরের চেয়ে বেশি। দেশের বাইরে থেকে কোরবানির পশু আমদানি করা হলে লোকসান গুনতে হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, গত বছর জেলায় কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ছিল ৫৬ হাজার ৮৫০। এবার ৯ হাজার ৬৬৯টি খামারে ৭২ হাজার ৯৪৬টি কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ৪০ হাজার ৭৪২টি বেশি। এবার জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৩২ হাজার ১৬৪টি।