নারায়ণগঞ্জে আ.লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৫

আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার সকালে নারায়ণগঞ্জের বক্তাবলীতে
ছবি: প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ৪ পুলিশ সদস্যসহ আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৫ জন। সোমবার সকালে থেকে দুপুর পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নদীবেষ্টিত বক্তাবলী ইউনিয়নের আকবর নগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিদের শহরের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আহত ব্যক্তিদের পরিচয় জানা যায়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সোমবার সকাল ৯টার দিকে আকবর নগর এলাকায় বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ সামেদ আলীর লোকজন এবং বক্তাবলী ইউনিয়নের পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলীর লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দুই পক্ষের সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শটগানের ২০টি গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে বেশ কয়েকটি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।

সংঘর্ষস্থল থেকে টেঁটা উদ্ধার করেছে পুলিশ
ছবি: প্রথম আলো

ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা শওকত আলী প্রথম আলোকে বলেন, সামেদ আলীর বাহিনী পাওনা টাকা চাওয়ায় তাঁর লোকজনের ওপর হামলা চালানো হয়। এ ঘটনার জেরে আজ সকালে সামেদ আলী ও তাঁর লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তিনি আরও বলেন, পুলিশের গুলিতে তাঁর পক্ষের সাতজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সামেদ আলী বলেন, ‘শওকত চেয়ারম্যানের সমর্থক জাকির হোসেনের নেতৃত্বে তাঁর লোকজন আমার ভাতিজির জামাই রাজ্জাকসহ আরও বেশ কয়েকজনের বাড়িঘর ভাঙচুর করেছেন। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।’

এলাকাবাসীর ভাষ্য, ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলীর ভাতিজা নূরুল হকের শ্যালক রফিকুল ইসলামের মুঠোফোনের দোকান থেকে সামেদ আলীর ছেলে গণি মিয়া এক হাজার টাকা ধার নেন। সেই পাওনা টাকা নিয়ে গত ২৫ আগস্ট রফিকুলের সঙ্গে গণি মিয়ার ঝগড়া হয়। ঝগড়ার বিষয়ে প্রতিবাদ করেন ইউপি চেয়ারম্যানের ভাতিজা নুরুল হক। এ ঘটনার জেরে সোমবার সকালে সামেদ আলী বাহিনী ও চেয়ারম্যান সমর্থক জাকির হোসেন বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে।

সংঘর্ষের সময় বাড়িঘরে ভাঙচুর করা হয়েছে।
ছবি: প্রথম আলো

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিজাউল হক প্রথম আলোকে বলেন, সামেদ আলীর বাহিনী ও জাকির হোসেনের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। টেঁটা নিয়ে এক পক্ষ অন্য পক্ষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে এবং বৃষ্টির মতো ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শটগানের ২০টি গুলি ছুড়েছে। ঘটনাস্থল থেকে টেঁটা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় চার পুলিশ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় কেউ কোনো মামলা করেননি।