মনোনয়ন না পেয়ে সমাবেশ ডেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিষোদ্‌গার

সংসদ সদস্য জাফর আলমের পক্ষে সমাবেশ। আজ বিকেলে
ছবি: প্রথম আলো

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ঘোষণার পরদিন এলাকায় ফিরে সমাবেশ করেছেন দলীয় মনোনয়ন থেকে বাদ পড়া কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম। সমাবেশে দলীয় প্রার্থী ও তাঁর সমর্থকদের বিরুদ্ধে বিষোদ্‌গার করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।

আজ সোমবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে চকরিয়া পৌর শহরের থানা রাস্তার মাথা এলাকায় এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দিতে তিনি কয়েক দিন ধরে ঢাকায় ছিলেন। মনোনয়ন ঘোষণার পর আজ চকরিয়ায় ফেরেন জাফর আলম।

সংসদ সদস্য জাফর আলম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। এবার তাঁর বদলে দলের কক্সবাজার জেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমদকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

দলীয় প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমদের উদ্দেশে সমাবেশে জাফর আলম বলেন, ‘তুমি তো রাজাকারের সন্তান। আগে তিনবার হেরেছ, এবারও তোমার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।’

সংসদ সদস্য জাফর আলমের পক্ষে সমাবেশ। আজ বিকেলে
ছবি: প্রথম আলো

সমাবেশে সালাহউদ্দিন আহমদের পক্ষ নেওয়ায় চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি সরওয়ার আলম এবং মাতামুহুরী সাংগঠনিক থানা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহসিন বাবুলেরও বিষোদ্‌গার করেন জাফর।

এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে জাফর আলম বলেন, ‘এলাকায় উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হব।’

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ছৈয়দ আলম। নৌকা প্রতীক নিয়ে এবং দলের বিদ্রোহী হিসেবে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন চেয়ারম্যান সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ছিলেন দল ও অঙ্গসংগঠনে তাঁর অনুসারী হিসেবে পরিচিত অনেক নেতা-কর্মী। নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের মধ্যে টৈটংয়ের জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী, হারবাংয়ের মেহেরাজ উদ্দিন, পূর্ব বড় ভেওলার ফারহানা আফরিন ও ফাঁসিয়াখালীর হেলাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য জাফর আলম। আজ বিকেলে
ছবি: প্রথম আলো

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘তাঁর এসব বিষোদ্‌গার দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া। তাঁর কথায় কিছু আসে যায় না। তিনি চুরি-ডাকাতি করেছেন বলে তাঁকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।’

২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য হন জাফর আলম। দায়িত্ব পালনকালে তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় ক্ষমতার অপব্যবহার, দলীয় লোকজনের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন, চিংড়ি ঘের ও জমি দখল, ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে হারানোর জন্য বিকল্প প্রার্থী দাঁড় করানো, দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বিষোদ্‌গারসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। সংসদ সদস্য হওয়ার আগে উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভার চেয়ারম্যানের পদে দায়িত্ব পালন করেছেন জাফর আলম।

এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া সালাহউদ্দিন আহমদ ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে দলের প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন। এসব নির্বাচনে দুবার বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমদ ও একবার তাঁর স্ত্রী হাসিনা আহমদ জয়ী হয়েছেন।