নারায়ণগঞ্জে কদম রসুল সেতুর প্রবেশমুখ ফলপট্টি থেকে সরানোর দাবি নাগরিক আন্দোলনের

নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর নির্মিতব্য কদম রসুল সেতুর নগর প্রান্তে প্রবেশমুখ পুননির্ধারণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন নারায়ণগঞ্জ নাগরিক আন্দোলনের নেতারা। শনিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে
ছবি: প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর নির্মিতব্য কদম রসুল সেতুর নগর প্রান্তের সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখ ফলপট্টি এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে নারায়ণগঞ্জ নাগরিক আন্দোলনের নেতারা।

তাঁদের দাবি, অপরিকল্পিতভাবে প্রকল্প হলে মানুষের ভোগান্তি বাড়বে। এটা মেনে নেবে না নারায়ণগঞ্জবাসী। তাই যথাযথ সমীক্ষার মাধ্যমে ত্রুটি সমাধান করে সেতুর নগর প্রান্তের প্রবেশমুখ পুনর্নির্ধারণের দাবি জানান তাঁরা। এর আগে গত মঙ্গলবার সেতুর প্রবেশমুখ সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছিলেন নাগরিক আন্দোলনের নেতারা।

আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, জেলার জনসংখ্যা ৩৯ লাখ ৯ হাজার, শহরে শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ে জনসংখ্যা সাড়ে ৯ লাখ। শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়কে সংযুক্ত করতে ২০১৭ সালে কদম রসুল সেতু একনেকে অনুমোদন হয়। সেতুর প্রকল্প নকশায় শহর প্রান্তে পশ্চিমাংশে প্রবেশমুখ ব্যস্ততম নবাব সিরাজউদ্দৌলা সড়কের ফলপট্টি এলাকায় নারায়ণগঞ্জ কলেজের সামনে এসে নেমেছে। এটি বাস্তবায়িত হলে নারায়ণগঞ্জের মানুষের যানজটে ভয়াবহ দুর্ভোগের কারণ হবে। এমনিতেই এই সড়কের ১ নম্বর রেলগেট থেকে পুরো সড়কে সব সময় অস্বাভাবিক যানজট থাকে। এই সড়কের পাশে নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল, নারায়ণগঞ্জ কলেজ, পাইকারি কাঁচা বাজার দ্বিগুবাবুর বাজার রয়েছে। এ ছাড়া রেলওয়ে নারায়ণগঞ্জ স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালসহ প্রতিদিন লক্ষাধিক লোকের আনাগোনা রয়েছে। এখানে সেতুর প্রবেশমুখ যুক্ত হলে বড় ধরনের সংকট তৈরি হবে এবং পুরো এলাকাটি যানজটে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে উঠবে।

রফিউর রাব্বি আরও বলেন, সেতুর প্রকল্প প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরে চলমান থাকলেও সেতুর ব্যবহারকারী নাগরিকদের সঙ্গে প্রকল্প নিয়ে মতবিনিময় বা তাঁদের অভিমত জানার জন্য কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। এ প্রকল্পে যথাযথ সমীক্ষার ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে। তাই যথাযথ সমীক্ষার মাধ্যমে এই ত্রুটি সমাধান করে গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুর শহর প্রান্তের সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখ পুনর্নির্ধারণের দাবি জানান তিনি। অপরিকল্পিত উন্নয়ন জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি করা ছাড়া কোনো সুফল বয়ে আনবে না। যেনতেনভাবে প্রকল্প সম্পন্ন করে নারায়ণগঞ্জের মানুষের দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হলে নারায়ণগঞ্জবাসী তা মেনে নেবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন নারায়ণগঞ্জ নাগরিক আন্দোলন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি ভবানী শংকর, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, ন্যাপ জেলার সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, খেলাঘর আসরের জেলা কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসভাপতি রথীন চক্রবর্তী, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী জেলা কমিটির সভাপতি জাহিদুল হক, বাসদ জেলার কমিটি সদস্যসচিব আবু নাঈম, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা, সিটি সাবেক কাউন্সিলর অসিত বরণ।