কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ট্রাকচালক জয়নাল আবেদীন হত্যা মামলায় দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও এক আসামিকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক সেলিনা আক্তার এ রায় দেন। এ ছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২ আসামিকে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা এবং কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। কুমিল্লার আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. মুজিবুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন লক্ষীপুরের রামগতি উপজেলার উত্তর চর লরেন্স গ্রামের আহসান উল্লাহ ও চট্রগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ছিকনিয়া পূর্বটিলা গ্রামের আবুল হোসেন। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মোহনপুর গ্রামের শামসুল হক। রায় ঘোষণার সময় তিন আসামিই আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। তাঁরা পলাতক।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালের ২০ জুন রাতে চট্রগ্রাম থেকে রড নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলেন ফেনীর পশুরাম উপজেলার বাসিন্দা ট্রাকচালক জয়নাল আবেদীন। ট্রাকটি ফেনীর লেমুয়া সেতু এলাকায় পৌঁছালে চালকের সহকারী গাড়ির গতি কমাতে বলেন। এরপর আহসান উল্লাহ ও আবুল হোসেন ওই ট্রাকে ওঠেন। ট্রাকে উঠেই তাঁরা ট্রাকের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করেন।
একপর্যায়ে চালক জয়নাল আবেদীনকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়। পরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আমানগন্ডা এলাকায় এসে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের পাশে জয়নালের লাশ ফেলে দেন আহসান উল্লাহ ও আবুল হোসেন। পরে শামসুল হকের কাছে রডগুলো বিক্রি করা হয়। ঘটনার পরদিন ২১ জুন সকালে চৌদ্দগ্রাম থানা–পুলিশ জয়নালের লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন থানার উপপরিদর্শক খন্দকার শাহ আলম। পরে পুলিশ এই মামলার তদন্ত করে। তদন্ত চলার সময় পুলিশ বিভিন্ন এলাকা থেকে আহসান উল্লাহ, আবুল হোসেন ও শামসুল হককে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁরা কুমিল্লার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. মুজিবুর রহমান বলেন, এ মামলায় ১৬ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। তবে মামলা চলাকালে আসামিরা জামিনে গিয়ে আত্নগোপনে চলে যান। আজ আদালতের বিচারক এই রায় দেন।
নিহত ট্রাকচালক জয়নাল আবেদীনের আত্নীয় কামরুল হাসান বলেন, ‘১৬ বছর পর রায় পেয়ে আমরা খুশি। এখন দ্রুত মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।’