সাংবাদিকতায় নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দরকার সঠিক তথ্য পরিবেশন

জাতীয় জার্নালিজম, মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন শীর্ষক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে। মঙ্গলবার তোলা ছবি
সংগৃহীত

পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে সাংবাদিকতায় বহুমাত্রা যুক্ত হয়েছে। সাংবাদিকতায় নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ যুক্ত হচ্ছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সঠিক তথ্য পরিবেশনে দৈনন্দিন এবং অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে নানা ধরনের বাধাবিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়। এই বাধাবিপত্তি উত্তরণে সাহস, পেশাগত দক্ষতা এবং ঐক্য অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে।জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দিনব্যাপী ‘জাতীয় জার্নালিজম, মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন’ শীর্ষক সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ এবং ম্যানেজমেন্ট রিসোর্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (এমআরডিআই) ও ফোয়ো মিডিয়া ইনস্টিটিউটের যৌথ উদ্যোগে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিশিষ্ট সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে এ সম্মেলন শুরু হয়। এ সম্মেলনে বাংলাদেশ-ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মোট ২৬টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে প্রথম দিন আটটি প্রবন্ধ এবং আজ ১৮টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে। বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমে নারীর অংশগ্রহণ কম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাংবাদিকতা পেশায় মাত্র ১০ শতাংশ নারীর উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। এর কারণ হিসেবে মানসিক, রাজনৈতিক এবং গণতান্ত্রিক নিরাপত্তার অভাবকে দায়ী করেন তিনি। এ বিষয়ে সুদৃষ্টি প্রদানের আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত।

মঙ্গলবার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম নেটওয়ার্কের বাংলা ইনিশিয়েটিভের সম্পাদক মিরাজ আহমেদ চৌধুরী। এ সময় তিনি বলেন, বৈশ্বিক পরিবর্তনের কারণে সাংবাদিকতায় তৈরি হয়েছে জানা-অজানা নানা প্রতিবন্ধকতা। সেই সঙ্গে তৈরি হয়েছে নতুন সম্ভাবনা। এ ছাড়া তিনটি প্রতিবন্ধকতা দেখিয়েছেন মিরাজ আহমেদ। সেগুলো হলো সেলফ সেন্সরশিপ, গণমাধ্যমের মালিকানা ও মেধাবীদের অনাগ্রহ।

সম্মেলনে ‘ইমার্জিং চ্যালেঞ্জ অ্যান্ড অপরচুনিটিস ইন জার্নালিজম’ বিষয়ে আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল আলম চৌধুরী, চ্যানেল আই অনলাইনের সম্পাদক জাহিদ নেওয়াজ খান। মডারেটর ছিলেন বিভাগের সভাপতি ও সহযোগী অধ্যাপক রাকিব আহমেদ।

গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপনায় ‘বাংলাদেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার প্রতিবন্ধকতা ও বিকাশ সম্ভাবনার পুনঃপরীক্ষা’ বিষয়ে গবেষণা নিবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খন্দকার আলী আর রাজী, ‘ফ্রেমিং দ্য হালদা রিভারস বায়োডাইভার্সিটি: অ্যান অ্যানালাইসিস অব অ্যাডভোকেসি ফ্রেমস ইন নিউজ’–এর ওপর গবেষণা নিবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রামের পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক জুয়েল দাস, ‘ফ্রেমিং অব রাশিয়া-ইউক্রেন ওয়ার ইন দ্য লিডিং নিউজপেপার ইন বাংলাদেশ’–এর ওপর গবেষণা নিবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী।

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, সম্মেলনের আহ্বায়ক ও বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার মণ্ডল, সহকারী অধ্যাপক সুমাইয়া সিফাত, সহকারী অধ্যাপক সালমা আহমেদ, সহকারী অধ্যাপক মৃধা মো. শিবলী নোমান, সাইদ আল জামান, প্রভাষক সালমা সাবিহা, শবনব ফেরদৌসী, নওশিন জাহান, এমআরডিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পান্ডে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক আ জ ম শফিউল আলম ভূঁইয়া, ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল হক, যমুনা টেলিভিশনের সিইও ফাহিম আহমেদ প্রমুখ।