নিষেধাজ্ঞা ভেঙে হালদা থেকে বালু উত্তোলন, বালুভর্তি বাল্কহেড জব্দ
প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীতে বালু উত্তোলনের অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় বালু পরিবহনে ব্যবহৃত একটি বাল্কহেডও জব্দ করছে তারা।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় নদীর চট্টগ্রামের হাটহাজারী অংশের দক্ষিণ মাদার্শা ইউনিয়নের বড়ুয়াপাড়া কাটাখালী খাল এলাকায় থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন ভোলা জেলা সদরের বাসিন্দা মুহাম্মদ সোলায়মান (২২) ও একই জেলার চরফ্যাশন উপজেলার মানজাদ গ্রামের বাসিন্দা মুহাম্মদ কালাম (৩২)। তাঁরা দুজন ওই বাল্কহেডের শ্রমিক বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরে তাঁদের আজ বৃহস্পতিবার কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
নৌ পুলিশ জানায়, গতকাল হাটহাজারীর ওই এলাকায় স্থানীয় রামদাস মুন্সিরহাট নৌ পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ রমজান আলীর নেতৃত্বে এ অভিযান হয়। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়। পরে দিবাগত রাত ১২টার দিকে হাটহাজারী থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন নৌ পুলিশের উপপরিদর্শক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। এরপর তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। হালদায় বালু উত্তোলনের দায়ে নৌ পুলিশের এটিই প্রথম মামলা।
এর আগে গত সোমবার বিকেলেও একই এলাকায় অভিযান চালিয়েছিল উপজেলা প্রশাসন। ওই ঘটনায়ও একটি বালুবাহী বাল্কহেড জব্দ করে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাশাপাশি গ্রেপ্তার তিনজনকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন নগরীর চান্দগাঁও থানার কালুরঘাটের বাসিন্দা মুহাম্মদ ইউচুপ, মুহাম্মদ হান্নান ও মুহাম্মদ সবুজ।
হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন জানায়, দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদী থেকে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ। পাশাপাশি নদীতে কোনো যান্ত্রিক নৌযান চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে বালুবাহী বাল্কহেড ঢুকিয়ে বালু পরিবহন ও বিক্রি করেন কিছু ব্যবসায়ী। এ কারণে অভিযান চালানো হয়।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল মুমিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘হালদা নদীর জীববৈচিত্র্য রক্ষায় জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এ নদী দেশের জাতীয় ঐতিহ্য। এটি ধরে রাখতে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের আরও সচেতন হতে হবে।’
হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বেশ কিছুদিন ধরে নদীতে আবার বালু উত্তোলনের সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে নৌ পুলিশ প্রথম কোনো মামলা করেছে। এটি ভালো দিক। কারণ মামলার ভয়ে বালু ব্যবসায়ীরা আগের তুলনায় নিষ্ক্রিয় হতে পারে।’